মহমেডান, মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট আগেই বিদায় নিয়েছিল। সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠে এসেছিল ডায়মন্ড হারবার এফসি। বাংলার ফুটবলের পতাকা বহনের দায়িত্ব ছিল কিবু ভিকুনার দলের হাতে। বাংলার মান বাঁচাতে ব্যর্থ ডায়মন্ড হারবার। ডুরান্ড কাপে অভিষেকেই ফাইনালে উঠেও শেষরক্ষা করতে পারল না। ডায়মন্ড হারবারকে ৬–১ ব্যবধানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হল নর্থইস্ট ইউনাইটেড।
কলকাতার চতুর্থ প্রধান তকমা পাওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে ডায়মন্ড হারবার এফসি। ডুরান্ড কাপের গ্রুপ লিগে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কাছে হারের আগে টানা ২৩ ম্যাচ অপরাজিত ছিল কিবু ভিকুনার দল। ডুরান্ডের নক আউটে পরপর দুটি ম্যাচে জামশেদপুর এফসি ও ইস্টবেঙ্গলের মতো দলকে হারিয়ে স্বপ্ন দেখিয়েছিল বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের। শনিবার ডুরান্ড ফাইনালে অনেক ইস্টবেঙ্গল–মোহনবাগান সমর্থকও হাজির হয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের হয়ে গলা ফাটাতে। কিন্তু বড় ম্যাচের চাপ নিতে ব্যর্থ কিবু ভিকুনার দল।
ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দুরন্ত ফুটবল খেলে প্রত্যাশা অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার। এদিন ফাইনালে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধেও খারাপ শুরু করেনি। প্রথম থেকেই ম্যাচের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল। ২৩ মিনিটে প্রথম সুযোগ আসে ডায়মন্ড হারবারের সামনে। বাঁদিক থেকে উঠে গিয়ে সেন্টার করেছিলেন গিরিক। তাঁর সেই সেন্টারে দুরন্ত হেড করেন জবি জাস্টিন। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে কোনও রকমে বাঁচান নর্থইস্ট ইউনাইটেড গোলকিপার। ২৭ মিনিটে জবির একটা দুরপাল্লার শট সাইড নেটে আছড়ে পড়ে।
২৯ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল নর্থইস্টের সামনে। হাওকিপের শট কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান ডায়মন্ড গোলকিপার মির্শাদ। তাঁর ভুলেই গোল হজম করে ডায়মন্ড। কর্নার থেকে জটলার মধ্যে বল পেয়ে নর্থইস্টের এক ফুটবলার গোল লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন। সেই বল তালুবন্দী করতে পারেননি মির্শাদ। বল তাঁর বুকে লেগে বেরিয়ে আসে। ফিরতি বল জালে পাঠিয়ে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে এগিয়ে দেন আশির আখতার।
৪৩ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ এসেছিল ডায়মন্ডের সামনে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। মিকেলের হেড বাঁচিয়ে দেন নর্থইস্ট গোলকিপার গুরমীত সিং। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে প্রতিআক্রমণে উঠে এসে ব্যবধান বাড়ায় নর্থইস্ট। আলাদিনের সঙ্গে পাস খেলে বাঁদিক দিয়ে ঢুকে কোনাকুনি শটে ২–০ করেন পার্থিব গোগোই।
এদিনের ম্যাচে যেন গ্রুপ লিগে মোহনবাগান ম্যাচের প্রতিচ্ছবি। দ্বিতীয়ার্ধে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে ডায়মন্ড রক্ষণ। ৫০ মিনিটে আলাদিনের পাস থেকে ৩–০ করেন থৈ সিং। এই গোলেই কিবু ভিকুনার দলের ম্যাচে ফেরার আশা শেষ হয়ে যায়। তবুও ৬৮ মিনিটে ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিল ডায়মন্ড হারবার। কর্নার থেকে বল পেয়ে গোল লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন মিকেল। জটলার মধ্যে বল লুকা মাজসেনের গায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে জালে জড়িয়ে যায়।
৮১ মিনিটে জাইরো বাসতারা নর্থইস্টের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন। মিনিট পাঁচেক পরই আলাদিনের পাস থেকে ৫–১ করেন গাইতান। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে ডায়মন্ডকে আরও লজ্জায় ফেলেন প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা আলাদিন। তাঁকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন রুয়াতকিমা। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে ৬–১ করেন আলাদিন।