দুই প্রধানের মাঠের মধ্যে লড়াই তো বরাবরই অন্য মাত্রা পেয়ে থাকে। মাঠের বাইরে বাকযুদ্ধেও কম যায় না। এবার সৌরভ গাঙ্গুলিকে নিয়ে ঘটি–বাঙালের লড়াই অন্যমাত্রা পেয়ে গেছে। আর এই লড়াই ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তিকে সম্মান জানানোকে ঘিরে। প্রশ্ন উঠছে, সৌরভকে ইস্টবেঙ্গলের সম্মান দেওয়ার গোপন খবর গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে পৌঁছল কী করে?
এবছর সৌরভকে মোহনবাগান রত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সবুজমেরুন কর্তারা। ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার কর্মসমিতির বৈঠকের পর মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত মোহনবাগান রত্ন পুরস্কারের জন্য সৌরভ গাঙ্গুলির নাম ঘোষণা করেন। তার কয়েক ঘন্টা পরই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, এবছর ভারত গৌরব সম্মানে ভূষিত করা হবে সৌরভকে। আর এই নিয়েই দুই ক্লাবের মধ্যে শুরু হয়েছে চাপান উতোর।
মোহনবাগানের দাবি, তারা সৌরভকে রত্ন দেওয়ার কথা ঘোষণা করতেই তাদের দেখাদেখি ইস্টবেঙ্গল ভারত গৌরব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গল কর্তারা আবার দাবি করেছেন, তাঁরাই আগে ভারত গৌরব সম্মানের জন্য সৌরভের নাম মনোনীত করেছে। তাদের দেখাদেখি নাকি মোহনবাগানই সৌরভকে রত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নিজের বক্তব্যের সমর্থনে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার একটা হোয়াটসআপের স্ক্রিনশট প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। সেই হোয়াটসআপ স্ক্রিনশটে সৌরভের সঙ্গে বার্তা আদানপ্রদানের প্রমান রয়েছে। যাতে দেখা যাচ্ছে ক্লাবের কর্তা দেবব্রত সরকার ২৩ জুন হোয়াটসআপ মেসেজের মাধ্যমে সৌরভের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ১ আগস্ট তিনি কলকাতায় থাকবেন কিনা। কিন্তু দেবব্রত সরকারের স্ক্রিনশটে কোথাও সৌরভকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়নি যে, তাঁকে ভারত গৌরব সম্মান দেওয়া হবে।
তর্কের খাতিরে মেনে নেওয়া গেল, ইস্টবেঙ্গল আগেই সৌরভকে ভারত গৌরব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের সেই গোপন সিদ্ধান্তের কথা মোহনবাগান ক্লাব কর্তাদের কাছে পৌঁছল কী করে? তাহলে কি সর্ষের মধ্যে ভূত আছে? ইস্টবেঙ্গলের আগেই সৌরভকে সম্মানিত করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি মোহনবাগান। তাই ২৯ জুলাই প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন সৌরভকে মোহনবাগান রত্ন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবস ১ আগস্ট। সেদিন তারা সৌরভকে ভারত গৌরব সম্মানে ভূষিত করবে। মরশুমের প্রথম ডার্বি হারলে কী হবে, সৌরভকে নিয়ে লড়াইয়ে অবশ্য বাজিমাত করে গেল সেই মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গলকে টেক্কা দিয়ে আগে মহারাজকে সম্মান জানিয়ে।
আরও পড়ুনঃ টানা তিনটি অলিম্পিকে পদক, প্যারিসে সোনা জয়ের স্বপ্নই অনুপ্রেরণা পিভি সিন্ধুর