কলকাতা লিগে এখনও জয় নেই। হতাশায় মাঠে আসাই ছেড়ে দিয়েছেন মহমেডান সমর্থকরা। কেউ কেউ আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন, ‘দলের জয় কেউ প্রত্যাশা করবেন না। জিতলে জানানো হবে।’ এছাড়া আরও নানারকম রসিকতা। ডুরান্ড কাপে সমর্থকদের রসিকতার জবাব দেওয়ার জন্যই বোধহয় মাঠে নেমেছিলেন মহমেডান ফুটবলাররা। ডায়মন্ড হারবার এফসি–র বিরুদ্ধে একেবারে অচেনা মহামেডান। তবুও জয় এল না। অ্যাডিসন সিংয়ের গোলে এগিয়ে গিয়েও ২–১ ব্যবধানে হার। ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে গোল করে ডায়মন্ড হারবারকে গুরুত্বপূর্ণ জয় এনে দেন লুকা মাজসেন।
শক্তির বিচারে মহমেডানের থেকে এগিয়ে থেকেই মাঠে নেমেছিল ডায়মন্ড হারবার এফসি। অভিজ্ঞ ফুটবলারের পাশাপাশি আক্রমণভাগে বিদেশি। তরুণ দল নিয়েও ভাল শুরু করেছিল মহামেডান। কলকাতা লিগে ৬ জন ভূমিপুত্র খেলানোর নিয়মে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কারণ ভালমানের বাঙালি ফুটবলার মহমেডান দলে নেই। ডুরান্ডে ভূমিপুত্রের নিয়ম না থাকায় অনেকটাই শক্তিশালী দল নামাতে পেরেছেন মহমেডান কোচ মেহরাজউদ্দিন।
তবুও ডায়মন্ড হারবারের বিরুদ্ধে রক্ষণ মজবুত করেই আক্রমণের রাস্তায় যাওয়ার স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিলেন মেহরাজ। তাঁর দলের ফুটবলাররা এদিন দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিলেন। ম্যাচের শুরুতেই সুযোগ এসে গিয়েছিল মহমেডানের কাছে। ৬ গজ বক্সের সামনে থেকে ডায়মন্ড হারবারের এক ডিফেন্ডারের গায়ে মারেন লালথানকিমা। ১৫ মিনিটে সুযোগ পায় ডায়মন্ড হারবার। নবাগত বিদেশি ক্লেটন সিলভা কাজে লাগাতে পারেননি। ২৭ মিনিটে তাঁরই একটা শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
অবশেষে আধিপত্য বজায় রেখে ৩৬ মিনিটে এগিয়ে যায় মহমেডান। মাঝমাঠ থেকে ডানপ্রান্তে বল বাড়ান তাংভা রাগোই। সেই বল ধরে অনেকটা এগিয়ে বক্সে ঢুকে ডানপায়ে জোরালো শট নেন অ্যাডিসন সিং। প্রথম পোস্টে দাঁড়িয়ে ছিলেন ডায়মন্ড হারবার গোলকিপার মিরশাদ। শটে এতটাই জোর ছিল, বল তাঁর হাতে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। ৪৫ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল অ্যাডিসনের সামনে। বাঁদিক থেকে অ্যাশলে কোলির বাড়ানো বলে পা ছুঁইয়েছিলেন। বল পোস্টের সামনে দিয়ে দিয়ে বেরিয়ে যায়।
সমতা ফেরানোর জন্য দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া হয়ে ওঠে ডায়মন্ড হারবার। শুরুতেই ক্লেটনের জায়গায় অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার লুকা মাজসেনকে মাঠে নিয়ে আসেন ডায়মন্ড হারবার কোচ কিবু ভিকুনা। স্যামুয়েলকেও নামান। বদলে যায় ডায়মন্ড হারবার। একের পর আক্রমণ তুলে নিয়ে আসে। এই সময় খেলা থেকে কিছুটা হারিয়ে যায় মহমেডান। সেই সুযোগেই সমতা ফেরায় ডায়মন্ড হারবার। ৫১ মিনিটে গোল লক্ষ্য করে দুরন্ত শট নিয়েছিলেন পল। কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান মহমেডান গোলকিপার। স্যামুয়েলের কর্নার থেকে হেডে গোল করে সমতা ফেরান রুয়াতকিমা।
৮৪ মিনিটে আবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল মহমেডানের সামনে। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে দুরন্ত শট নিয়েছিলেন সজল বাগ। তাঁর সেই শট ডায়মন্ড হারবার গোলকিপারের আঙুল স্পর্শ করে বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচ যখন নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে, সেই সময়ই জ্বলে ওঠেন লুকা মাজসেন। ইনজুরি সময়ের ৯ মিনিটের মাথায় গোল করে ডায়মন্ডকে জয় এনে দেন এই বিদেশি। দুরন্ত ফুটবল খেলেও জয় অধরা থেকে গেল মহমেডানের।