এবছর নাইট নাইডার্সের সাফল্যের রসায়ন কি বাইশ গজ? ৬ ম্যাচে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত। পছন্দের পিচ পেলেই জ্বলে ওঠে নাইটরা। আর একটু এদিক–ওদিক হলেই উল্টো ছবি। তাই পছন্দের পিচ না পেলে গোঁসা হয় নাইট অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানের। ইডেনে দুটো ম্যাচে পছন্দের পিচ পায়নি নাইট শিবির। ব্যর্থতা। একটা ম্যাচ স্পিনাররা সাহায্য পেতেই জয়। শনিবার চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে স্পিনিক ট্র্যাক পেতেই অন্য চেহারাই নাইট রাইডার্স। সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী, মইন আলি, এই ত্রয়ী স্পিনারের দাপটে বিধ্বস্ত চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটিং লাইন। ঘরের মাঠে লজ্জার হার চেন্নাইয়ের। ৫৯ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে জয় নাইট রাইডার্সের।
দুই দলের মূল শক্তি স্পিন। তবে চেন্নাই সুপার কিংসের তুলনায় নাইট রাইডার্সের স্পিনাররা বেশি ভয়ঙ্কর। এদিন চিপকের বাইশ গজে তারই নমুনা রাখলেন সুনীল নারাইনরা। তিন স্পিনার নিয়ে এদিন প্রথম একাদশ সাজিয়েছিল নাইট রাইডার্স। টস জিতে চেন্নাইকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন নাইট অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে। বৈভব আরোরার সঙ্গে নতুন বলে শুরু করেছিলেন মইন আলি। তাঁর হাত ধরেই আসে প্রথম সাফল্য। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই ডেভন কনওয়েকে (১১ বলে ১২) তুলে নেন মইন। পরের ওভারের প্রথম বলে রাচিন রবীন্দ্রকে (৯ বলে ৪) ফেরান হর্ষিত রানা। চিপকের মন্থর বাইশ গজে শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় চেন্নাই। রান তোলার গতিও কমে যায়। রাহুল ত্রিপাঠি ও বিজয় শঙ্কর জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
দশম ওভারে বিজয় শঙ্করকে (২১ বলে ২৯) তুলে নিয়ে জুটি ভাঙেন বরুণ চক্রবর্তী। এরপরই ভেলকি শুরু নাইট স্পিনারদের। সুনীল নারাইন ও বরুণের দাপটে ধস নামে চেন্নাইয়ের ব্যাটিং লাইনে। পরপর ফিরে যান রবীন্দ্র জাদেজা (০), দীপক হুডা (০)। তার আগেই রবিচন্দন অশ্বিনকে (১) ফেরান হর্ষিত রানা। দলের বিপর্যয়ে চেন্নাই সমর্থকরা তাকিয়ে ছিলেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির দিকে। তিনিও ব্যর্থ। সুনীল নারাইনের স্পিনের জালে আটকে পড়ে এলবিডব্লু হন ধোনি (১)।
অন্যপ্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলেও এক প্রান্ত আগলে থাকেন শিবম দুবে। তাঁর ২৯ বলে অপরাজিত ৩১ রানই চেন্নাইকে ১০০ রানের গণ্ডি পার করে দেয়। শেষপর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১০৩ তোলে চেন্নাই। নাইটদের বিরুদ্ধে এটাই চেন্নাইয়ের সর্বনিম্ন স্কোর। শুধু নাইটদের বিরুদ্ধে নয়, ঘরের মাঠেও। দুরন্ত বোলিং করে ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন সুনীল নারাইন। বরুণ চক্রবর্তী ২২ রানে নেন ২ উইকেট। ১৬ রানে ২ উইকেট হর্ষিত রানার।
জয়ের জন্য ১০৪ রানের লক্ষ্য নাইটদের কাছে মোটেই কঠিন ছিল না। তার ওপর শুরু থেকেই দুই ওপেনার কুইন্টন ডিকক ও সুনীল নারাইন ঝড় তোলায় আরও সহজ হয়ে যায়। চেন্নাই অধিনায়ক ধোনি অবশ্য জোরে বোলারদের দিয়েই আক্রমণ শানিয়েছিলেন। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে কুইন্টন ডিককের (১৬ বলে ২৩) স্টাম্প ছিটকে দিয়ে চেন্নাইকে প্রথম সাফল্য এনে দেন অনশুল কম্বোজ। ৩ ওভার পরেই বিধ্বংসী হয়ে ওঠা সুনীল নারাইনকে (১৮ বলে ৪৪) তুলে নেন নুর আমেদ। এরপর দলকে জয় এনে দেন অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে ( ১৭ বলে অপরাজিত ২০) ও রিঙ্কু সিং (১২ বলে অপরাজিত ১৫)। ৫৯ বল বাকি থাকতে ২ উইকেট হারিয়ে ১০৭ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেয় নাইট রাইডার্স।
আরও পড়ুনঃ ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে মোহনবাগান, অতীতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না কোচ হোসে মোলিনা
আরও পড়ুনঃ কলকাতার প্রথম দল হিসেবে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন, ইতিহাসে ইস্টবেঙ্গল মহিলা দল, সুযোগ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও