ব্যাট হাতে আবার বলে উঠলেন অভিষেক শর্মা। বল হাতে স্বমহিমায় কুলদীপ যাদব। অনেকদিন পর পুরনো ছন্দে দেখা গেল যশপ্রীত বুমরাকেও। এদের দাপটেই বাংলাদেশকে ৪১ রানে উড়িয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। ভারতের ১৬৮/৬ রানের জবাবে ১৯.৩ ওভারে বাংলাদেশ শেষ ১২৭ রানে।
টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান জাকের আলি। চোটের জন্য ছিটকে যাওয়া অধিনায়ক লিটন দাসের জায়গায় তিনি মাঠে নামেন। এদিন প্রথম একাদশে চারটি পরিবর্তন করে বাংলাদেশ। লিটনের জায়গায় পারভেজ হোসেন। শরিফুল ইসলাম, আমেদ তাসকিন ও মেহেদি হাসানের পরিবর্তে তানজিম হাসান, মহম্মদ সইফুদ্দিন এবং রিশাদ হোসেন।
নতুন বল হাতে ভাল শুরু করেছিলেন তানজিম। প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রান দেন। শুরুতে তিনি এদিন আটকে রেখেছিলেন অভিষেক শর্মাকে। মহম্মদ সইফুদ্দিন অবশ্য নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। অন্যদিকে, দুর্দান্ত বোলিং করেন রিশাদ। তিনি ও সইফ হাসান মাঝের ওভারে ভারতীয় ব্যাটারদের আটকে না রাখলে অনায়াসে ২০০ রানের গন্ডি পার করে ফেলত।
দ্বিতীয় ওভারেই এদিন ধাক্কা খাওয়ার হাত থেকে বেঁচে যায় ভারত। নাসুম আমেদের বলে ক্যাচ তুলে রক্ষা পান অভিষেক শর্মা। তৃতীয় ওভারে তানজিমের বলে আরও একবার ক্যাচ দিয়েছিলেন। কিপার জাকের আলি ঝাঁপিয়ে পড়েও তালুবন্দী করতে পারেননি। শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল দিনটা অভিষেকের নয়। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, ধাতস্থ হয়ে নিজেকে মেলে ধরেছেন। অভিষেক ছন্দ ফিরে পেতেই ভারতের রানের গতি তরতর করে বাড়তে থাকে। পাওয়ার প্লে–র ৬ ওভারে পৌঁছে যায় ৭২ রানে।
পাওয়ার প্লে–র পরের ওভারেই ভারত প্রথম উইকেট হারায়। রিশাদ হোসেনের বলে তানজিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন শুভমান (১৯ বলে ২৯)। শুভমান আউট হওয়ার পর হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন অভিষেক। তাঁর ৫০ আসে ২৫ বলে। শুভমান আউট হওয়ার পর তিন নম্বরে বাঁহাতি শিবম দুবেকে (৩ বলে ২) পাঠানো হয়েছিল। পরিকল্পনা কাজে লাগেনি।
অভিষেক অবশ্য নিজস্বভঙ্গীতেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। দ্বাদশ ওভারের প্রথম বলেই ছন্দপতন। মুস্তাফিজুর রহমানের বল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে খেলেছিলেন সূর্যকুমার যাদব। রানের জন্য দৌড়েছিলেন অভিষেক। সূর্য তাঁকে ফিরিয়ে দেন। ক্রিজে ফেরার আগেই রিশাদ আমেদের থ্রো ধরে নন–স্ট্রাইকিং প্রান্তে উইকেট ভেঙে দেন মুস্তাফিজুর। ৬টি ৪ ও ৫টি ৬–এর সাহায্যে ৩৭ বলে ৭৫ রান করে আউট হন অভিষেক। একই ওভারে আউট হন সূর্যকুমার যাদবও (১১ বলে ৫)। তিলক ভার্মাও (৭ বলে ৫) নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। হার্দিক পান্ডিয়া (২৯ বলে ৩৮) ও অক্ষর প্যাটেল (১৫ বলে অপরাজিত ১০) ভারতকে ১৬৮/৬ রানে পৌঁছে দেন। ২৭ রানে ২ উইকেট নেন রিশাদ হোসেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একেবারেই ছন্দে ছিলেন না যশপ্রীত বুমরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবশ্য পুরনো মেজাজে পাওয়া গেল ভারতের এই সেরা বোলারকে। তাঁর হাত ধরেই প্রথম সাফল্য। নিজের প্রথম ও দলের দ্বিতীয় ওভারে তুলে নেন তানজিদ হাসানকে। সইফ হাসান ও পারভেজ হোসেন দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পাওয়ার প্লে–র ৬ ওভারে ৪৪/১ তোলে বাংলাদেশ।
সপ্তম ওভারে আক্রমণে এসেই পারভেজকে (১৯ বলে ২১) তুলে নেন কুলদীপ। শুরুর দিকে বরুণ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ছিলেন সইফ হাসান। কিন্তু বরুণের জোড়া সাফল্যে কোনঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথমে ফেরান শামিম হোসেনকে (০)। পরে তুলে নেন মহম্মদ সইফুদ্দিনকে (৪)। জাকের আলির রান আউট আরও চাপ বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশের। ৩ উইকেটে ৭৪ থেকে ১০৯ রানে ৬ হারায়। সেখান থেকে আর ম্যাচে ফেরা সম্ভব ছিল না। সইফ হাসানের (৫১ বলে ৬৯ ) লড়াইয়ে ১২৭ রানে পৌঁছয় বাংলাদেশ। দুরন্ত বোলিং করে ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন কুলদীপ যাদব। ১৮ রানে ২ উইকেট যশপ্রীত বুমরার।