বরাবরই তিনি ব্যতিক্রমী। মোহনবাগান দিবসেও তার নমুনা রাখলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। এবছর তাঁকে মোহনবাগান রত্ন সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ক্লাব কর্তারা। ২৯ জুলাই মোহনবাগান দিবসে পুরস্কার নিতেও হাজির ছিলেন। পুরস্কার নিলেন। কিন্তু মোহনবাগান রত্ন–র জন্য ক্লাবের দেওয়া ২ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিলেন সৌরভ। তাঁর ইচ্ছে, এই অর্থ ক্লাবের ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টে ব্যবহার করা হোক।
অনুষ্ঠানে সৌরভ গাঙ্গুলিকে উত্তরীয় পরিয়ে বরম করে নেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁর হাতে পুস্পস্তবক তুলে দেওয়া হয়। এরপর সৌরভের গলায় মোহনবাগান রত্ন–র পদক পরিয়ে দেন ক্লাব সচিব দেবাশিস দত্ত। মোহনবাগান রত্ন পেয়ে আপ্লুত সৌরভ। তিনি বলেন, ‘সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়ার সময় প্রতিটা ম্যাচ দেখতে আসতাম। বাবার মেম্বারশিপ কার্ড নিয়ে মাঠে আসতাম। সেই সময় যারা থেলতেন, প্রত্যেক ফুটবলারের নাম বলে দিতে পারব। মোহনবাগান ক্লাব অতীতে বহু রত্ন উপহার দিয়েছে। আগামী দিনেও দেবে।’
খেলার যে আরও উন্নতির প্রয়োজন, সেকথাও তুলে ধরেন সৌরভ। তিনি বলেন, ‘দল জিতলেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলে চলবে না। খেলার মানোন্নয়ন করতে হবে। আমি আশাবাদী, আমার জীবদ্দশাতেই ভারত বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলবে। ৫০ জন ভাল ফুটবলার প্রয়োজন, যারা বিশ্বাস করবে, আমরাও পারি।’ মোহনবাগান দিবস যে তাঁর কাছে গর্বের, সেকথাও জানান সৌরভ। বক্তৃতা দেওয়ার সময় বারবার আবেগপ্রবন হয়ে পড়ছিলেন তিনি। সৌরভের বক্তব্যের পর মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত জানান, মোহনবাগান রত্ন–র পুরস্কার অর্থ নিচ্ছেন না সৌরভ। এই অর্থ তিনি মোহনবাগান ক্লাবের ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টে দান করে দিচ্ছেন।
মোহনবাগান দিবস পালনে এবছর একটু ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মোহনবাগান কর্তারা। ঠিক হয়েছিল মূল অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হবে ক্লাবের জন্মস্থান উত্তর কলকাতার মোহনবাগান লেনে। পরিকল্পনা মতো মোহনবাগান লেন থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে হয়। সেই শোভাযাত্রা পৌঁছয় ময়দানে ক্লাব তাঁবুতে। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন সচিব দেবাশিস দত্তসহ ক্লাবের কার্যকরী কমিটির সদস্যরা। ক্লাব তাঁবুতে পতকা উত্তোলন, প্রদীপ জ্বালানো হয়। মাল্যদান করা হয় অমর একাদশের প্রতিকৃতিতে। দুপুরে প্রাক্তন ফুটবলারদের প্রদর্শনী ম্যাচ।
বিকেল ৫টায় হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। জীবন কৃতি সম্মান পেলেন বলাই মুখোপাধ্যায়। সেরা ফুটবলারের সম্মান দেওয়া হল দিমিত্রি পেত্রাতোসকে। সেরা ফরোয়ার্ডের সম্মান পেলেন মনবীর সিং। সেরা জুনিয়র ফুটবলার সুহেল ভাট। প্রতুল চক্রবর্তী নামাঙ্কিত সেরা রেফারির পুরস্কার পেলেন দিলীপ সেন। সেরা সমর্থক হলেন বাপি মাঝি, অজয় পাশওয়ান। সেরা হকি প্লেয়ায় হলেন সৌরভ পাশিম। সেরা সাংবাদিক হয়ে মতি নন্দী নামাঙ্কিত পুরস্কার পেলেন দেবাশিস দত্ত। সেরা কর্মকর্তা অঞ্জন মিত্র পুরস্কার পেলেন সৌরভ পাল। বর্ষসেরা ক্রিকেটার অভিলীন ঘোষ। সেরা অ্যাথলিট হয়েছেন করুণাময় মাহাতো।
আরও পড়ুনঃ দিমিত্রিকে টেক্কা দিতে এসে গেছেন দিমিত্রিয়স, লাল–হলুদ জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচেই ফুল ফোটালেন