বাইশ গজ পরিবর্তনেই বদলে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের ভাগ্য। প্রথম ম্যাচে। আগের ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে যে উইকেটে খেলা হয়েছিল, সেই উইকেটে খেলতে চেয়েছিল নাইটরা। অজিঙ্কা রাহানেদের আবদার মেটাননি ইডেনের পিচ কিউরেটর সুজন মুখার্জি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ম্যাচের উইকেটেই খেলতে হল। প্রথম ম্যাচের মতো একই পরিণতি। আবার হারের মুখে পড়তে হল নাইটদের। লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিশাল রান তাড়া করে অবশ্য লড়াই করে হার মাত্র ৪ রানে।
টস জিতে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান নাইট রাইডার্স অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে। দারুণ শুরু করেছিল লখনউ সুপার জায়ান্টসের দুই ওপেনার এইডেন মার্করাম ও মিচেল মার্শ। ওপেনিং জুটিতে দুজনে তোলেন ৯৯ রান। একাদশ ওভারে এসে জুটি ভাঙেন হর্ষিত রানা। একাদশ ওভারের দ্বিতীয় বলে তিনি এইডেন মার্করামকে বোল্ড করেন। ২৮ বলে ৪৭ রান করে আউট হন মার্করাম। লখনউর ১০০ রান আসে ১০.৩ ওভারে।।
মার্করাম আউট হওয়ার পর হর্ষিত রানার ওই ওভারেই হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মিচেল মার্শ। তাঁর হাফ সেঞ্চুরি আসে ৩৬ বলে। প্রথম ১৫ বলে মাত্র ১৪ রান করেছিলেন মার্শ। পরে বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। মার্করাম আউট হওয়ার পরও রানের গতি কমেনি লখনউ সুপার জায়ান্টসের নিকোলাস পুরানকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান মার্শ। জুটি ভাঙতে আন্দ্রে রাসেলকে আক্রমণে নিয়ে আসেন অজিঙ্কা রাহানে। রাসেলের দ্বিতীয় বলেই আউট হন মার্শ। যেভাবে খেলছিলেন সেঞ্চুরি প্রাপ্য ছিল। কিন্তু আন্দ্রে রাসেলের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে রিঙ্কু সিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মার্শ। ৪৮ বলে তিনি করেন ৮১ রান।
মার্শ আউট হলেও রানের গতি কমেনি লখনউর। নাইট বোলারদের কাছে রীতিমতো দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ান নিকোলাস পুরান। মাত্র ২১ বলেই তিনি হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যান। হর্ষিত রানাকে পরপর দু’বলে দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন পুরান। ১৭.৩ ওভারে ২০০ রানে পৌঁছে যায় লখনউ সুপার জায়ান্টস। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রান তুলে লখনউ। নাইট বোলারদের ওপর রীতিমতো তান্ডব চালিয়ে ৩৬ বলে ৮৭ রান করে অপরাজিত থাকেন নিকোলাস পুরান। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ৭টি চার ৮টি ছয়। নাইট রাইডার্সের হর্ষিত রানা ৫১ রানে ২ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ২৩৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। কুইন্টন ডিকককে (৯ বলে ১৫) তুলে নেন আকাশ দীপ। শুরুতে উইকেট হারালেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং থেকে সরে আসেননি সুনীল নারাইন ও অজিঙ্কা রাহানে। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারেই ৯০ রানে পৌঁছে যায় নাইট রাইডার্স। এরপরই দিগবেশ রাঠিকে আক্রমণে নিয়ে আসেন ঋশভ পন্থ। প্রথম ওভারেই সাফল্য। সুনীল নারাইনকে (১৩ বলে ৩০) তুলে নেন দিগবেশ।
সুনীল আউট হওয়ার পর নাইটদের এগিয়ে নিয়ে যান রাহানে ও বেঙ্কটেশ আয়ার। ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রাহানে। ১৩ তম ওভারের শেষ বলে রাহানেকে তুলে নিয়ে জুটি ভাঙেন শার্দুল ঠাকুর। ৩৫ বলে ৬১ রান করে আউট হন নাইট অধিনায়ক। রাহানে আউট হওয়ার পরপরই ফিরে যান রমনদীপ সিং (২ বলে ১)। এরপর অঙ্গকৃষ রঘুবংশীকে (৫) তুলে নেন আবেশ খান। পরের ওভারেই বেঙ্কটেশ আয়ারকে (২৯ বলে ৪৫) ফেরান আকাশ দীপ। পরপর উইকেট হারানোর চাপ সামলাতে পারেনি নাইট রাইডার্স। রাসেল ৭ রান করে আউট হন। শেষদিকে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন রিঙ্কু সিং। তবে দলকে জয় এনে দিতে পারেননি। ২০ ওভারে ২৩৪/৭ রানে থেমে যায় নাইট রাইডার্স। ১৫ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন রিঙ্কু। লখনউ সুপার জায়ান্টসের আকাশ দীপ ও শার্দুল ঠাকুর ২ টি করে উইকেট নেন।