যে কোনও বড় প্রতিযোগিতা উদ্বোধন সাধারণত জাঁকজমকভাবেই করা হয়। আর অলিম্পিক হলে তো কোনও কথাই নেই। বরাবরই অলিম্পিকের উদ্বোধনে অন্যরকম আকর্ষণ থাকে। এবার আরও বেশি। আর সবথেকে বড় কথা প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কোনও স্টেডিয়ামে হচ্ছে না, নদীবক্ষে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়োজকরা।
কোনও স্টেডিয়ামে কেন এবারের অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা হচ্ছে না? রহস্য অন্য জায়গায়। প্যারিস অলিম্পিকের থিম হল, খেলাকে বাইরে ছড়িয়ে দেওয়া। আর এই ‘গেমস ওয়াইড ওপেন’–কে সামনে রেখেই রাজধানী থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরিয়ে নিয়েছে আয়োজকরা। প্যারিসের সিন নদীবক্ষে হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
নদীবক্ষে আবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান! কথাটা শুনে হয়তো অনেকে চমকে উঠবেন। কিন্তু এটাই বাস্তব। ঐতিহাসিক আইফেল টাওয়ারের পূর্ব কোণে শুরু হওয়া অস্টারলিটজ সেতু থেকে বার্জে ও নৌকা করে সিন নদীতে ৬ কিলোমিটার পাড়ি দেবেন অ্যাথলিটরা। নদীর দু’পাশে দর্শকদের জন্য বিশেষ স্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছে। বিশেষভাবে তৈরি এই স্ট্যান্ডে বসে ৫ লাখেরও বেশি দর্শক অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন। তবে এর জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হবে দর্শকদের। প্রায় ৩ হাজার ইউরোর কাছাকাছি দামে বিক্রি হয়েছে অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের টিকিট। তবে বিনামূল্যেও যে দর্শকরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে পারবেন না, এমন নয়। স্ট্যান্ড ছাড়া নদীর তীর ও পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলি থেকেও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন দর্শকরা।
শুধু জায়গা নির্বাচন নয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও থাকছে চমক। গোটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ১২টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মোট তিন হাজার নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও বিনোদনকর্মী অংশ নেবেন। শিল্পীরা নদীর দুই পাড়ে, সেতুর ওপরে ও কাছাকাছি স্মৃতিস্তম্ভগুলোতে থাকবেন। প্যারিসের স্থানীয় সময় সন্ধে ৭.৩০ মিনিটে (ভারতীয় সময় রাত ১১টা) শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ৪ ঘন্টার এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দিনের আলোতে শুরু হলেও গোধুলিলগ্নে শেষ হবে। প্যারিসের অপরূপ গোধুলিলগ্নের মুহূর্তও দর্শকরা যাজে উপভোগ করতে পারেন, তাই আয়োজকরা অলিম্পিকের উদ্বোধনের জন্য এই সময়টাকে বেছে নিয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমগ্র পরিকল্পনা করেছেন বিখ্যাত থিয়েটার পরিচালক টমাস জলি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সর্বপ্রথম পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে অলিম্পিকের আঁতুরঘর গ্রিসকে। এটাই অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ঐতিহ্য। এরপর একে একে অন্যান্য দেশের সঙ্গে পরিচয় পর্ব সারা হবে। সবশেষে আসবে আয়োজক ফ্রান্স। ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার জন্য রাশিয়া ও বেলারুশকে নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থা। এই দুই দেশের ক্রীড়াবিদরা নিরপেক্ষ দেশের হয়ে অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন। সিন নদীবক্ষে এবারের অলিম্পিকের উদ্বোধন এবার সত্যিই অন্যমাত্রা পেতে চলেছে।
আরও পড়ুনঃ লালকার্ড কোচ হাকিম ও জেমস সিংয়ের, ১০ জনে খেলেও নৈহাটির পয়া মাঠে জয়ের সরণিতে মহমেডান
আরও পড়ুনঃ র্শক তান্ডব, ২ ঘন্টা ম্যাচ বন্ধ, শেষ বাঁশি বাজার পর আবার খেলা, বিতর্কিত ম্যাচে হার আর্জেন্টিনার