দেশের মাঠে ভারত শেষ টেস্ট সিরিজ খেলেছে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। কেমন দর্শক হয়েছিল? গ্যালারি ভরা তো দুরের কথা, মাঠে দর্শক টেনে আনতে আয়োজক সংস্থাকে হিমসিম খেতে হয়েছিল। অন্য রাজ্যের কথা বাদ দিন। ইডেনে টেস্ট ম্যাচ থাকলেও গ্যালারি ভরাতে দেদার বিনামূল্যে টিকিট বিতরণ করে সিএবি। আর সামান্য একটা রনজি ম্যাচেই কিনা গ্যালারি ভর্তি! শুধু তাই নয়, পদপিস্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে খেলতে নেমেছে দিল্লি ও রেলওয়েজ। এই মাচে খেলছেন বিরাট কোহলি। ১২ বছর পর আবার রনজিতে মাঠে নেমেছেন। তাঁকে দেখার জন্য কোহলিপ্রেমীদের তুমুল উদ্দীপনা। বৃহস্পতিবার ভোর ৩টে থেকেই স্টেডিয়ামের গেটে লাইন দিতে শুরু করেন দর্শকরা। একসময় লাইন ২ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছে যায়। গেট খুলতেই হুড়োহুড়ি করে ঢুকতে গিয়ে কয়েকজন পড়ে গিয়ে আঘাত পান। কয়েকজন পদপিস্ট হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে এক নিরাপত্তারক্ষী আহত হন। পুলিশের একটি মোটরসাইকেলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুদিবসে এদিন অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের পাশের রাস্তা দিয়ে এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে দিল্লি অ্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় সব গেট খুলে দিয়ে দর্শকদের মাঠের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে। গেট খোলার সময় ১৬ নম্বর গেটে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েকজন দর্শক মাটিতে পড়ে আহত হন। অনেকের পা থেকে জুতো খুলে যায়। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা করার বন্দোবস্ত করেন ডিডিসিএর নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশকর্মীরা।
১৬ ও ১৭ নম্বর গেটেই ভিড়ের চাপ ছিল বেশি। গৌতম গম্ভীর স্ট্যান্ড ভরে যেতেই বিষেণ সিং বেদীর নামাঙ্কিত স্ট্যান্ড খুলে দেওয়া হয়। সেখানে ১৪ হাজার দর্শকের বসে খেলা দেখার বন্দোবস্ত রয়েছে। মাঠে খেলা দেখতে কোনও পয়সা লাগছে না। কিন্তু ডিডিসিএ নির্দেশ দিয়েছিল, দর্শকদের আধার কার্ড সঙ্গে আনার। যদিও শেষ অবধি হুড়োহুড়ি, ঠেলাঠেলিতে আধার কার্ড পরীক্ষা করে দর্শকদের ঢোকানো সম্ভব হয়নি। যত ভিড় হয়েছিল তা সামাল দেওয়ার পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত ছিল না।
কোহলি মাঠে নামতেই গগনবিদারী চিৎকার শুরু হয়। ‘কোহলি, কোহলি...’ ধ্বনিতে স্টেডিয়াম মাতিয়ে তোলেন দর্শকেরা। কেউ কেউ কোহলির আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সংক্ষিপ্ত রূপ ধরে ‘আরসিবি, আরসিবি...’ রব তোলেন। কোহলিও দর্শকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন। টস জিতে রেলওয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠান দিল্লির অধিনায়ক আয়ুশ বাদোনি। ম্যাচের ১২তম ওভারে নিরাপত্তাবেষ্টনী টপকে মাঠে ঢুকে পড়েন কোহলির এক ভক্ত। দৌড়ে প্রিয় খেলোয়াড়ের কাছে গিয়ে তাঁর দুই পা ছুঁয়ে শ্রদ্ধা জানান। ১৫ জন নিরাপত্তাকর্মী সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে ওই ভক্তকে মাঠের বাইরে নিয়ে যান।
প্রথমে ব্যাট করে রেলওয়েজ ২৪১ রান তুলেছে। নভদীপ সাইনি ও সুমিত মাথুর ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। ব্যাট করতে নেমে দিনের শেষে দিল্লি ১ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান তুলেছে।
আরও পড়ুনঃ ঋদ্ধিমানের বিদায়ী ম্যাচে দুরন্ত বোলিং অভিষেককারী সুমিত মোহান্তর, তবুও স্বস্তিতে নেই বাংলা