ইচ্ছে ছিল দেশের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জীবনের শেষ টেস্ট খেলে অবসর নেবেন। সেই ইচ্ছে সম্ভবত পূরণ হচ্ছে না বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। নির্বাচকরা দলে রাখলেও দেশের জনতার বিক্ষোভে হয়তো মাঠে নামা সম্ভব হবে না। দেশে সাকিব–বিরোধী বিক্ষোভ যেভাবে শুরু হয়েছে, তাঁর দেশে ফেরাই কঠিন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম টেস্ট। বুধবারই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মিরপুর টেস্টের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচকরা দলে রেখেছেন সাকিবকে। কিন্তু তাঁর দেশে ফেরা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। দুবাইয়ে অবস্থানরত সাকিবকে দেশে ফিরতে আপাতত নিষেধ করা হয়েছে।
ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ খেলেই দেশে না ফিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উড়ে গিয়েছিলেন সাকিব। বাংলাদেশে গনঅভ্যুত্থানের পর থেকেই মার্কিনমুলুকই সাকিবের ঠিকানা। সেখান থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ খেলতে আজই বাংলাদেশ পৌঁছনোর কথা ছিল। সেই মতো নিউ ইয়র্ক থেকে বুধবারই দুবাই পৌঁছে যান। দুবাই থেকে আজ সন্ধের বিমানে ঢাকা যাওয়ার কথা সাকিবের। কিন্তু সাকিবকে বাংলাদেশের বিমান ধরতে নিষেধ করা হয়েছে। বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে তুমুল বিক্ষোভ চলছে। সাকিবকে যেন দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলতে না দেওয়া হয়, সে দাবি নিয়ে আজকেও একটি পক্ষের স্মারকলিপি নিয়ে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে যাওয়ার কথা।
বুধবার দল ঘোষণার পর সন্ধেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যে প্রায় শতাধিক মানুষ সাকিবের কুশপুতুল দাহ করেন। ক্রিকেটপ্রেমী জনতার ব্যানারে শিক্ষার্থীরা সাকিবকে ভোটচোর, জুয়াড়ি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। দেশে ফিরলে তাঁর গালে জুতো মারা হবে, এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রশাসন ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। সূত্রের খবর, সরকারের পক্ষ থেকেই সাকিবকে দেশে ফিরতে নিষেধ করা হয়েছে। শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগের সাংসদ ছিলেন সাকিব। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলা চলছে। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি দেশছাড়া।
ভারতের বিরুদ্ধে কানপুর টেস্টে মাঠে নামার আগে সাকিব বলেছিলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হলে তিনি দেশে ফিরবেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মিরপুর টেস্টেও খেলতে চান। তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ক্রিকেটার হিসেবে সাকিবকে যতটুকু নিরাপত্তা দেওয়া দরকার ততটুকু দিতে পারবে। সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক সত্তার কারণে কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় নতুন করে সাকিবকে নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হওয়ায় তাঁর মাঠে নামা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।