পরপর দুটি ম্যাচ জিতে আগেই ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে পৌঁছে গেছে নিউজিল্যান্ড। লিগ পর্বে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ম্যাচ ছিল কার্যত সেমিফাইনাল। যে দল জিতবে, তারাই ফাইনালে উঠবে। বড় রান করেও শেষরক্ষা হল না দক্ষিণ আফ্রিকার। রেকর্ড রান তাড়া করে ৬ উইকেটে জিতে ফাইনালে পাকিস্তান। দুরন্ত জোড়া সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানকে জয় এনে দেন অধিনায়ক মহম্মদ রিজওয়ান ও সলমান আগা।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ভাল শুরু করেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি টনি ডি জর্জি (১৮ বলে ২২)। এরপর দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এগিয়ে নিয়ে যান অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা ও অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরিকারী ম্যাথু ব্রিৎজকে। জুটিতে ওঠে ১১৯ রান। ৯৬ বলে ৮২ রান করে আউট হন বাভুমা। এরপর ক্রিজে নেমেই ঝড় তোলেন হেনরিখ ক্লাসেন। এদিন অল্পের জন্য সেঞ্চুরি পেলেন না ব্রিৎজকে। ৮৪ বলে ৮৩ রান করে তিনি আউট হন। মুলডার (২) রান না পেলেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় রানে পৌঁছে দেন ক্লাসেন ও ভেরেইনে। ৫৬ বলে ৮৭ রান করে আউট হন ক্লাসেন। ৩২ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ভেরেইনে। ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৫২ তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তানের হয়ে শাহিন আফ্রিদি ৬৬ রানে ২ উইকেট নেন।
৩৫৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে জয় পাওয়াটা রীতিমতো কঠিনই ছিল পাকিস্তানের কাছে। কিন্তু সেই কঠিন কাজটাই সহজ করে ফেলেন অধিনায়ক মহম্মদ রিজওয়ান ও সলমান আগা। শুরুটা ভাল করেছিলেন ফখর জামান (২৮ বলে ৪১) ও বাবর আজম (১৯ বলে ২৩)। সৌদ শাকিলও (১৬ বলে ১৫) বড় রান পাননি। একসময় ৯১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে জুটি বাঁধেন মহম্মদ রিজওয়ান ও সলমান আগা।
দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও বোলার রিজওয়ান ও সলমানের ওপর প্রভাব ফেলতে পারেননি। দুজনের জুটিতে ওঠে ২৬০। রান তাড়া করতে নেমে এটাই পাকিস্তানের জুটিতে সর্বাধিক রানের রেকর্ড। এর আগের রেকর্ড ছিল ইমরান ফারহাত ও মহম্মদ হাফিজের। ২০১১ সালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে দুজনে ২২৮ রানের জুটি গড়েছিলেন।
পাকিস্তানের ইনিংসের ৪৩তম ইনিংসে মুলডারকে ছক্কা হাঁকিয়ে ৯৪ রান থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছন রিজওয়ান। ২০২৩ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষবার সেঞ্চুরি করেছিলেন। তারপর আবার সেঞ্চুরি পেলেন। মুলডারের এই ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে সেঞ্চুরিতে পৌঁছন সলমান। একদিনের ক্রিকেটে তাঁর জীবনের প্রথম সেঞ্চুরি আসে ৮৭ বলে। সলমান যখন আউট হন জয় থেকে মাত্র ২ রান দুরে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ১ ওভার বাকি থাকতে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৫৫ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। ১০৩ বলে ১৩৪ রান করে আউট হন সলমান আগা। ১২৮ বলে ১২২ রান করে অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান।
এর আগে ৩৪৯ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের। ২০২২ সালে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। সেই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন ইমাম–উল–হক ও বাবর আজম। সেই রেকর্ড এদিন ভেঙে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার নজির গড়ল পাকিস্তান।