রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘদিন ধরেই দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ। আইসিসি কিংবা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের কোনও প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানে খেলতে যায় না ভারত। এবার পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত–পাকিস্তান ক্রিকেটীয় সম্পর্ক অন্যদিকে মোড় নিল। ভারত পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে ভবিষ্যতে আইসিসি ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের আয়োজিত প্রতিযোগিতায় তারা পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে না। এই ব্যাপারে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে চিঠি লিখে অনুরোধ জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদত আছে। এমনই মনে করছে ভারত সরকার। তাই সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও রকম ক্রিকেটীয় সম্পর্ক রাখতে চায় না। এমনকী, পাকিস্তানের মুখোমুখিও হতে চায় না। আগে নিরপেক্ষ স্থানে খেললেও এবার কোথাও না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সহ–সভাপতি রাজীব শুক্লা বলেছেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি। সরকারের সিদ্ধান্তই আমাদের অবস্থান। আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলি না। ভবিষ্যতেও খেলব না। কারণ, এটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত।’ বোর্ডের আর এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা বর্তমান পরিস্থিতির প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীল।
সেপ্টেম্বর–অক্টোবরে ভারতে বসবে মহিলাদের একদিনের বিশ্বকাপ। বাছাইপর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে পাকিস্তান। এবাবের প্রতিযোগিতায় ৮ দলকে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে সব দলকেই একে ওপরের মুখোমুখি হতে হবে। গতবছর ডিসেম্বরে ভারতীয় ক্রিকোট বোর্ড ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল, ভারত যেহেতু চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে দল পাঠায়নি, তাই পাকিস্তানও মেয়েদের বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে আসবে না। এবার আইসিসি–কে সরাসরি চিঠি দিয়ে ভারতীয় বোর্ড জানিয়ে দিল, তারা পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে না।
এবছর সেপ্টেম্বর–অক্টোবরে পুরুষদের এশিয়া কাপও ভারতে হওয়ার কথা। সামনের মাসে লটারি অনুষ্ঠিত হবে। খসড়া যে সূচি তৈরি করা হয়েছে, তাতে ভারত ও পাকিস্তানকে একই গ্রুপে রাখা হয়েছে। কিন্তু পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে চাইছে না। যদি দুই দেশ একে অপরের মুখোমুখি না হয়, তাহলে যে কোনও প্রতিযোগিতাতেই আইসিসি কিংবা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। কারণ, আইসিসি–র বিপুল পরিমাণ আয়ের বড় উৎস ভারত ও পাকিস্তান ম্যাচ।
এবারের এশিয়া কাপ একান্তই যদি ভারতে না হয়, তাহলে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী কিংবা শ্রীলঙ্কায় হবে। কিন্তু ভারত যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে না চায়, এসিসি সমস্যায় পড়বে। কারণ, এসিসি ইতিমধ্যেই ১৭ কোটি মার্কিন ডলারে আগামী ৪ বছরের জন্য এশিয়া কাপের সম্প্রচারস্বত্ব সোনি স্পোর্টস নেটওয়ার্কের কাছে বিক্রি করেছে। স্বত্ব বিক্রির সময় চুক্তি হয়েছে, প্রতিটি এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্যায়ে ভারত–পাকিস্তান ২ বার করে মুখোমুখি হবে। যদি দুটি দল ফাইনালে ওঠে, তাহলে তিনবার। ভারতের সিদ্ধান্তে চিন্তার ভাঁজ এসিসি–র কপালে।
আরও পড়ুনঃ হায়দরাবাদের কাছে হেরে প্লে অফের আশা কার্যত শেষ ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইয়ের