দুই দলের কাছেই ছিল জয়ের সরণিতে ফেরার লড়াই। তবে দিল্লি ক্যাপিটালসের তুলনায় কলকাতা নাইট রাইডার্সের ওপর চাপ বেশি ছিল। কারণ, প্লে অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে গেলে দিল্লির বিরুদ্ধে জিততেই হত। মরণবাঁচন ম্যাচে দারুণভাবেই জ্বলে উঠল নাইট রাইডার্স। দিল্লিকে ১৪ রানে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল অজিঙ্কা রাহানের দল। ব্যাট ও বল হাতে দুরন্ত পারফরমেন্স করে ম্যাচের সেরা সুনীল নারাইন।
টস জিতে নাইট রাইডার্সকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান দিল্লি ক্যাপিটালস অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল। শুরু থেকেই ঝড় তোলেন নাইট রাইডার্সের দুই ওপেনার সুনীল নারাইন ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ। দুষ্মন্ত চামিরার দ্বিতীয় ওভারেও ওঠে ২৫। ওপেনিং জুটিতে ৩ ওভারে ওঠে ৪৮। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে গুরবাজকে (১২ বলে ২৬) তুলে নিয়ে নাইট শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মিচেল স্টার্ক। পাওয়ার প্লে–র ৬ ওভারে ৭৯/১ তোলে নাইট রাইডার্স।
সপ্তম ওভারে দ্বিতীয় উইকেট হারায় নাইটরা। দলীয় ৮৫ রানের মাথায় আউট হন সুনীল নারাইন (১৬ বলে ২৭)। পরের ওভারে ফিরে যান নাইট অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে। ১৪ বলে ২৬ রান করে তিনি আউট হন। ১ ওভার পরেই ফিরে যান ভেঙ্কটেশ আয়ার। নাইট রাইডার্সের সর্বোচ্চ মূল্যের ক্রিকেটার আবার ব্যর্থ। ৫ বলে মাত্র ৭ রান করে অক্ষর প্যাটেলের বলে তিনি আউট হন। রাহানে ও ভেঙ্কটেশকে তুলে নিয়ে নাইট রাইডার্সকে চাপে ফেলে দেন দিল্লি অধিনায়ক।
১০ ওভারের মধ্যে ১১৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর নাইট রাইডার্সকে এগিয়ে নিয়ে যান অঙ্গকৃষ রঘুবংশী ও রিঙ্কু সিং। জুটিতে ওঠে ৬১ রান। এই জুটিই নাইটকে বড় রানের দিকে এগিয়ে দেন। ১৭তম ওভারে দুষ্মন্ত চামিরার বলে আউট হন অঙ্গকৃষ। ৩২ বলে তিনি করেন ৪৪। পরের ওভারেই রিঙ্কু সিংকে তুলে নেন বিপরাজ নিগম। ২৫ বলে ৩৬ রান করেন রিঙ্কু। শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে নাইট রাইডার্সকে ২০০ রানের গন্ডি পার করে দেন আন্দ্রে রাসেল। ওই ওভারেই রভম্যান পাওয়েল (৫ বলে ৫), অনুকূল রায় (০) ও রাসেল (৯ বলে ১৭) আউট হন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ২০৪ রান তোলে নাইট রাইডার্স। ৪৩ রানে ৩ উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক। অক্ষর প্যাটেল ও বিপরাজ নিগম ২টি করে উইকেট পান।
টিম কম্বিনেশনে এদিন কিছুটা বদল নিয়ে এসেছিল নাইট রাইডার্স। দিল্লির মন্থর উইকেটের কথা ভেবে চেতন সাকারিয়ার পরিবর্তে অনুকূল রায়কে প্রথম একাদশে রেখেছিল। তাঁর হাতেই নতুন বল তুলে দিয়েছিলেন অজিঙ্কা রাহানে। দ্বিতীয় বলে অভিষেক পোড়েলকে (২ বলে ৪) তুলে নেন অনুকূল। পঞ্চম ওভারে করুণ নায়ারকে (১৩ বলে ১৫) ফেরান বৈভব আরোরা। এক ওভার পরেই লোকেশ রাহুলের (৫ বলে ৭) রান আউট চাপে ফেলে দেয় দিল্লিকে।
এরপর চাপ কাটিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন অক্ষর প্যাটেল ও ফাফ ডুপ্লেসি। ১৪ তম ওভারে জোড়া ধাক্কা সুনীল নারাইনের। দ্বিতীয় বলে ফেরান অক্ষর প্যাটেলকে (২৩ বলে ৪৩), ষষ্ঠ বলে ট্রিস্টান স্টাবসকে (৩ বলে ১)। নারাইনের এই ওভারটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। এক ওভার পরেঅই ফাফ ডুপ্লেসিকে (৪৫ বলে ৬২) তুলে নিয়ে দিল্লিকে একেবারে ব্যাকফুটে পাঠিয়ে দেন সুনীল নারাইন। বিপরাজ নিগম (১৯ বলে ৩৮) ও আশুতোষ শর্মার (৬ বলে ৭) ওপর কিছুটা প্রত্যাশা ছিল। আশুতোষকে তুলে নেন বরুণ চক্রবর্তী। বিপরাজের (১৯ বলে ৩৮) প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান তুলতে সমর্থ হয় দিল্লি। ২৯ রানে ৩ উইকেট নেন সুনীল নারাইন। ৩৯ রানে ২ উইকেট বরুণ চক্রবর্তীর। দিল্লিকে হারিয়েও লিগ টেবিলে এগোতে পারল না নাইটরা। ১০ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরেই রইল ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চারে দিল্লি।