কলকাতা নাইট রাইডার্সকে দেখলেই যেন কেঁপে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। গত বছর থেকে শুরু। এবছরও ছবিটা বদলাল না। গতবছর এই ইডেনেই হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জয় তুলে নিয়েছিল। তারপর কোয়ালিফায়ার ও ফাইনালে জয়। এবারও ইডেনে বাজিমাত সেই নাইটদেরই। হায়দরাবাদকে ৮০ রানে উড়িয়ে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন নাইটদের। বরুণ চক্রবর্তী, বৈভব আরোরাদের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল হায়দরাবাদের স্বপ্নের ব্যাটিং লাইন।
টস জিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ব্যাট করতে পাঠান সানরাইজার্স হায়দরাবাদ অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। এদিনও দলকে ভরসা দিতে পারেনি নাইট রাইডার্সের ওপেনিং জুটি। ৩ ওভারের মধ্যে ১৬ রানেই দুই ওপেনার কুইন্টন ডিকক (১) ও সুনীল নারাইন (৭) সাজঘরে। আগের ম্যাচের মতো তাহলে আবার কি ব্যাটিং বিপর্যয়? আশঙ্কা একটা তৈরি হয়েছিল। যদিও ঘরের মাঠে দলকে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়তে দেননি অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে ও অঙ্গকৃষ রঘুবংশী। দুজনের জুটিতে ওঠে ৮১।
একাদশ ওভারের শেষ বলে রাহানেকে তুলে নিয়ে জুটি ভাঙেন জিশান আনসারি। ২৭ বলে ৩৮ রান করে আউট হন রাহানে। ১ ওভার পরেই অঙ্গকৃষ রঘুবংশীকে ফেরান কামিন্দু মেন্ডিস। আইপিএল অভিষেকে প্রথম ওভারেই উইকেট। ৩২ বলে ৫০ রান করে আউট হন অঙ্গকৃষ। পরপর ২ উইকেট হারানোর পর কিছুটা চাপে পড়ে যায় নাইট রাইডার্স। দলকে চাপ থেকে বার করে বড় রানে পৌঁছে দেন বেঙ্কটেশ আয়ার ও রিঙ্কু সিং। ৩ ম্যাচ পর অবশেষে রানের মুখ দেখলেন নাইট রাইডার্সের ২৩.৭৫ কোটির বেঙ্কটেশ। তাঁর ২৯ বলে ৬০ রান নাইট রাইডার্সকে ২০০/৬ রানে পৌঁছে দেয়। ১৭ বলে ৩২ রান করে অপরাজিত থাকেন রিঙ্কু সিং। হায়দরাবাদের হয়ে মহম্মদ সামি, প্যাট কামিন্স, জিশান আনসারি, হর্ষাল প্যাটেল, কামিন্দু মেন্ডিস ১টি করে উইকেট পান।
গত বছর প্রথম ম্যাচে ২০৮ রান তাড়া করে দারুণ লড়াই করেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এদিন ১৩ বলের মধ্যেই দলের ৩ সেরা ব্যাটারকে হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে যায়। সেই চাপ থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারেনি। বৈভব আরোরাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করলেও দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন ইমপ্যাক্ট পরিবর্ত হিসেবে খেলতে নামা ট্রাভিস হেড (২ বলে ৪)। পরের ওভারে অভিষেক শর্মাকে (৬ বলে ২) তুলে নেন হর্ষিত রানা। তৃতীয় ওভারে ঈশান কিষাণকে (৫ বলে ২) ফিরিয়ে হায়দরাবাদকে চাপের মুখে ফেলে দেন বৈভব আরোরা। ৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে হায়দরাবাদ। চাপ আরও বেড়ে যায় সপ্তম ওভারে রাসেলের বলে নীতীশ কুমার রেড্ডি আউট হওয়ার পর। ১৫ বলে ১৯ রান করে আউট হন নীতীশ।
নীতীশ আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হায়দরাবাদের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। কামিন্দু মেন্ডিস (২০ বলে ২৭), অনিকেত ভার্মা (৬ বলে ৬) পরপর ফিরে যান। হেনরিখ ক্লাসেনও এদিন বড় রান করতে ব্যর্থ। তবুও তাঁর ব্যাট থেকেই এদিন হায়দরাবাদের সর্বোচ্চ রান এল। ২১ বলে ৩৩ রান করে তিনি আউট হন। প্যাট কামিন্স করেন ১৫ বলে ১৪। ১৬.৪ ওভারে ১২০ রানে গুটিয়ে যায় হায়দরাবাদের ইনিংস। দুরন্ত বোলিং করে ২২ রানে ৩ উইকেট নেন বরুণ চক্রবর্তী। ২৯ রান ৩ উইকেট বৈভব আরোরার।