২–১ অবস্থায় পিছিয়ে থেকে সিরিজ বাঁচানোর জন্য পঞ্চম টেস্টে খেলতে নেমেছে ভারত। লন্ডনের কেনিংটন ওভালের বাইশ গজ ঘাসে ঢাকা। তার ওপর মেঘলার কারণে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। জোরে বোলিংয়ের এইরকম আদর্শ পরিবেশে সিরিজ বাঁচানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কিনা দলের সেরা জোরে বোলারকে বিশ্রাম। বুমরা যদি থাকতেন, ওভালে সিরিজে সমতা ফেরানোর কাজটা সহজ হত ভারতের কাছে। বুমরাহীন বোলিং শক্তিতেই নাজেহাল দশা ইংল্যান্ডের। ভারতের প্রথম ইনিংসের ২২৪ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন চা–বিরতির সময় ইংল্যান্ডের রান ২১৫/৭। কাঁপিয়ে দিলেন মহম্মদ সিরাজ।
ওভাল টেস্টে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের জন্য বিশ্রামে বুমরা। তাঁর জায়গায় প্রথম একাদশে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। আরও তিনটি পরিবর্তন ভারতের প্রথম একাদশে। ব্যাটিং গভীরতা বাড়াতে প্রথম একাদশে করুণ নায়ার। বাদ শার্দূল ঠাকুর। ঋষভ পন্থের জায়গায় ধ্রুব জুরেল। অংশুল কম্বোজের জায়গায় ফিট হওয়া আকাশদীপ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথো দিনের শেষে ভারত তুলেছিল ৬ উইকেটে ২০৪ রান। একসময় ভারতের রান ছিল ৬ উইকেটে ১৫৩। মনে হচ্ছিল ২০০ রানের গণ্ডিও টপকাতে পারবে না ভারত। সেখান থেকে দলকে টানেন করুণ নায়ার ও ওয়াশিংটন সুন্দর। প্রথম দিনের শেষে করুণ নায়ার ৫২ রানে, ওয়াশিংটন ১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এই জুটি ভারতকে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, সেটাই ছিল দেখার। দিনের তৃতীয় ওভারেই জশ টাংয়ের ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লু হন নায়ার (৫৭), ভারতের বড় রানের স্বপ্ন ওখানেই শেষ। পরের ওভারেই ওয়াশিংটন সুন্দরকে (২৬) তুলে নেন গাস অ্যাটকিনসন। এক ওভার পরেই ২ বলের ব্যবধানে মহম্মদ সিরাজ (০) ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে (০) তুলে নিয়ে ভারতকে ২২৪ রানে গুটিয়ে দেন তিনিই। ৩৩ রানে ৫ উইকেট নেন অ্যাটকিনসন। ৫৭ রানে ৩ উইকেট জশ টাঙের।
ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। টি২০ মেজাজে ব্যাটিং করছিলেন দুই ওপেনার বেন ডাকেট, জ্যাক ক্রলি। মনেই হচ্ছিল না টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নেমেছেন। রিভার্স স্কুপ থেকে শুরু করে টি২০ ফরম্যাটের সব ধরণের শটই খেলছিলেন ডাকেট। আর তাতেই বিপদ ডেকে নিয়ে আসেন। আকাশদীপের বলে রিভার্স স্কুপ খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধ্রুব জুরেলের হাতে ক্যাচ দেন ডাকেট (৩৮ বলে ৪৩)। মারেন ৫টি ৪ ও ২টি ৬। ওপেনিং জুটিতে ১২.৪ ওভারে ৯২ রানে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। এরপর ক্রলিকে (৫৭ বলে ৬৪) তুলে নেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ক্রলির ৫৬ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে। মারেন ১৪টি ৪।
দুই ওপেনার আউট হওয়ার পর রানের গতি কমে যায় ইংল্যান্ডের। বুমরাহীন ভারতীয় বোলিং শক্তিকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব তুলে নেন মহম্মদ সিরাজ। তিনিই ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারে ধস নামান। তুলে নেন ক্রিজে জমে যাওয়া ওলি পোপ (২২), জো রুটকে (২৯)। ফেরান জ্যাকব বেথেলকেও (৬)। এরপর একই ওভারে জেমি স্মিথ (৮) ও গাস অ্যাটকিনসনকে (০) তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলে দেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। চা–বিরতির সময় ইংল্যান্ড তোলে ২১৫/৭। লড়াই করছেন হ্যারি ব্রুক (৩৩)।