বাংলাদেশে ক্রিকেট দলের মূল সমস্যা ব্যাটিং। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজের শেষ ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেন মাহমুদুল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও গড়ল বাংলাদেশ। তবুও জয় এল না। তৃতীয় তথা শেষ একদিনের ম্যাচে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ৩–০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০ বছর ক্যারিবিয়ানদের কাছে একদিনের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হতে হল বাংলাদেশকে।
টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক সাই হোপ। তৃতীয় ওভারে জোড়া ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এক বলের ব্যবধানে তানজিদ হাসান (০) ও লিটন দাসকে (০) তুলে নেন আলজেরি জোসেফ। ৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর প্রথম ওভারেই স্লিপে ব্র্যান্ডন কিংয়ের হাতে জীবন পাওয়া সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। দুজনের জুটিতে ওঠে ১৩৬। এই জুটিই বাংলাদেশের বড় রানের ভিত গড়ে দেয়।
১৪৫ রানের মাথায় আউট হন সৌম্য সরকার। ৭৩ বলে তিনি করেন ৭৩। ১৭১ রানের মাথায় ৬ বলের ব্যবধানে আউট হন মিরাজ (৭৩ বলে ৭৭) ও আফিফ হোসেন (২৯ বলে ১৫)। এরপর জাকের আলিকে নিয়ে ১৫০ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে তোলেন মাহমুদুল্লাহ। একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে সর্বোচ্চ। শেষ ৪ ওভারে ৫৯ রান তোলে বাংলাদেশ। ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে পৌঁছে যায় ৩২১ রানে। ৬৩ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মাহমুদুল্লাহ। ৫৭ বলে ৬২ রান করে অপরাজিত থাকেন জাকের আলি। আলজারি জোসেফ ৪৩ রানে ২ উইকেট নেন।
দুরন্ত ব্যাটিং করেও বাংলাদেশর জয় অবশ্য অধরাই থেকে গেল। মাহমুদুল্লাহদের ম্লান করে সেন্ট কিটসের ২২ গজ শাসন করে গেলেন জীবনের প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলতে নামা আমির জাঙ্গু। বাঁহাতি এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার অভিষেকেই ঝোড়ো সেঞ্চুরি করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে স্মরণীয় জয় এনে দেন। যদিও বাংলাদেশের বড় রানের জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভাল করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩১ রানের মধ্যেই ফিরে যান ব্রেন্টন কিং (১৫), অ্যালিক অ্যাথানেজ (৭) ও অধিনায়ক সাই হোপ (৩)। এরপর দলকে কিছুটা এগিয়ে দেন শেরফানে রাদারফোর্ড (৩৩ বলে ৩৩)।
রাদারফোর্ড আউট হওয়ার পর দায়িত্ব কাংধে তুলে নেন কেজি কার্টি ও আমির জাঙ্গু। দুজনের জুটিতে ওঠে ১৩২। এই জুটিই ক্যারিবিয়ানদের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। ৮৮ বলে ৯৫ রান করে আউট হন কেসি কার্টি। রস্টন চেজও (১২) দ্রুত ফেরেন। এরপর গুডাকেশ মোতিকে (৩১ বলে ৪৪) সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন আমির জাঙ্গু। ৮৩ বলে ১০৪ রান করে তিনি অপরাজিত থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ও বিশ্বের ১৬তম ব্যাটার হিসেবে একদিনের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেন জাঙ্গু। ২৫ বল হাতে থাকতেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে জাঙ্গুও ছক্কা মেরে স্বপ্ন পূরণ করেছেন। বাংলাদেশকে তেতো স্বাদ দেওয়া জাঙ্গুই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্রেসিংরুমে ছড়িয়ে দিয়েছেন মধুময় আনন্দ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩২১/৫ (মাহমুউল্লাহ অপরাজিত ৮৪, মিরাজ ৭৭, সৌম্য ৭৩, জাকের অপরাজিত ৬২, জোসেফ ২/৪৩)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৫.৫ ওভারে ৩২৫/৬ (আমির জাঙ্গু অপরাজিত ১০৪, কার্টি ৯৫, মোতি অপরাজিত ৪৪, রিশাদ ২/৬৯)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচের সেরা আমির জাঙ্গু।
সিরিজের সেরা শেরফানে রাদারফোর্ড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩–০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ী।
আরও পড়ুনঃ টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে–র অংশ হতে পেরে উত্তেজিত ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফুটবলার সোল ক্যাম্পবেল
আরও পড়ুনঃ তালালের চোট, জিকসনের লালকার্ড। জোড়া ধাক্কা সামাল দিতে ব্যর্থ, এগিয়ে গিয়েও ওডিশার কাছে হার ইস্টবেঙ্গলের