নিউজিল্যান্ডের কাছে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার সময় ভারতীয় দলকে নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে পার্থে প্রথম টেস্টে দাপট ভারতের। যশপ্রীত বুমরার দলের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। জয়ের জন্য ৫৩৪ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ১২/৩। হার বাঁচাতে অস্ট্রেলিয়াকে এখনও ৫২২ রান তুলতে হবে।
ভারতের ১৫০ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছিল ১০৪ রানে। ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। ৪৬ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারত তুলেছিল ১৭২/০। যশস্বী জয়সওয়াল ৯০ ও লোকেশ রাহুল ৬২ রানে ক্রিজে ছিলেন। তৃতীয় দিন সকালেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জয়সওয়াল। সেঞ্চুরি করার সঙ্গে সঙ্গে স্পর্শ করেন এম জয়সীমা এবং সুনীল গাভাসকরের কৃতিত্ব। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি করেছিলেন এই দুই ব্যাটার। ভারতের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে এই নজির গড়লেন।
তৃতীয় দিন সকালে ভারত প্রথম উইকেট হারায় ২০১ রানে। ৭৭ রান করে আউট হন লোকেশ রাহুল। এরপর যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় দেবদত্ত পাড়িক্কল। ২৫ রান করে আউট হন পাড়িক্কল। পাড়িক্কল আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ফেরেন যশস্বী জয়সওয়াল। ২৯৭ বলে ১৬১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন যশস্বী। ঋষভ পন্থ (১) ও ধ্রুব জুরেল (১) দ্রুত ফেরার পর হার ধরেন বিরাট কোহলি।
সাম্প্রতিক ব্যর্থতা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কোহলিকে। এদিন সেঞ্চুরি করে সমালোচনার জবাব দিলেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সবচেয়ে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরির নিরিখে টপকে গেলেন কিংবদন্তী শচীন তেন্ডুলকরকে। এই নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৭টি সেঞ্চুরি করলেন বিরাট কোহলি। অন্যদিকে, শচীনের রয়েছে ৬টি সেঞ্চুরি। পার্থে ১০০ করার সঙ্গে সঙ্গে টেস্টে ৩০টি সেঞ্চুরিতে পৌঁছে গেলেন কোহলি। কোহলি সেঞ্চুরি করার সঙ্গে সঙ্গে ৪৮৭/৬ রান তুলে ইনিংস সমাপ্তি ঘোষণা করে দেয় ভারত। নীতীশ রেড্ডি ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে নাথান লায়ন ২টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ৫৩৪ রানের বিশাল রানের লক্ষ্য নিয়ে কেঁপে যায় অস্ট্রেলিয়া। দিনের শেষ বেলায় ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের চতুর্থ বলেই নাথান ম্যাকসুইনিকে (০) তুলে নে বুমরা। নৈশ প্রহরী হিসেবে নিজেই ব্যাট করতে নেমেছিলেন অসি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স (২)। তাঁকে তুলে নেন মহম্মদ সিরাজ। পরের ওভারেই মার্নাস লাবুশেনকে (৩) ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়া কাঁপুনি আরও বাড়িয়ে দেন যশপ্রীত বুমরা। দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া তুলেছে ১২/৩। ক্রিজে রয়েছেন উসমান খোয়াজা (৩)। জয়ের জন্য এখনো ৫২২ রানের পাহাড় টপকাতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এত রান তাড়া করে আগে কোনও দল জেতেনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ১৫০ ও ৪৮৭/৬ (জয়সওয়াল ১৬১, কোহলি অপরাজিত ১০০, রাহুল ৭৭, নীতীশ অপরাজিত ৩৮, ওয়াশিংটন ২৯, পাড়িক্কল ২৫, পন্থ ১, জুরেল ১, লায়ন ২/৯৬, হ্যাজেলউড ১/২৮, মার্শ ১/৬৫, কামিন্স ১/৮৬, স্টার্ক ১/১১১)।
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ১০৪ ও ১২/৩ (খোয়াজা অপরাজিত ৩, লাবুশেন ৩, কামিন্স ২, ম্যাকসুয়েনি ০, বুমরা ২/১, সিরাজ ১/৭)।
(তৃতীয় দিনের শেষে)