জীবন যুদ্ধে হেরে গেলেন অংশুমান গায়কোয়াড়। ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ভারতের এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। বুধবার রাতে নিজের শহর বরোদাতেই মারা যান গায়কোয়াড়। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তাঁর মৃত্যুতে দেশের ক্রিকেটমহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকেও শোকপজ্ঞাপন করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্লাড ক্যান্সারে ভুগছিলেন অংশুমান গায়কোয়াড়। চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অংশুমানের দুই প্রাক্তন সতীর্থ সন্দীপ পাটিল ও দিলীপ বেঙ্গসরকার লন্ডনে তাঁকে দেখতে যান। মাসখানেক আগে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর বরোদাতেই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মারণ রোগের সঙ্গে লড়াইয়ে পেরে উঠলেন না।
১৯৭৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর ইডেনে দুর্ধর্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল অংশুমানের। অভিষেক টেস্টে অ্যান্ডি রবার্টসদের দুরন্ত পেস ব্যাটারির সামনে ৬ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ওই টেস্টে ভীরত ৮৫ রানে জিতেছিল। ২ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর ক্যারিবিয়ান পেস ব্যাটারির বিরুদ্ধে হেলমেট ছাড়াই দুরন্ত ৮১ রান করেছিলেন। ওই সিরিজেই মাইকেল হোল্ডিংয়ের বলে কানে আঘাত পান। কানের পর্দা ফেটে যায়। অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছিল।
দেশের হয়ে ৪০টি টেস্ট খেলেছেন অংশুমান গায়কোয়াড়। রান করেছেন ১৯৮৫। গড় ৩০.০৭। শতরান করেছেন ২টি, অর্ধশতরান ১০টি। সর্বোচ্চ রান ২০১। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জীবনের সর্বোচ্চ রান করে ছিলেন অংশুমান। একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন ১৫টি। গড় ২০.৬। রান করেছেন ২৬৯। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২০৬ ম্যাচে ১২১৩৬ রান করেছেন, উইকেট নিয়েছেন ১৪৩টি। ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর পর কোচিংয়ে আসেন অংশুমান গায়কোয়াড়। ১৯৯৭ সালে ভারতীয় দলের দায়িত্ব নেন। তাঁর কোচিংয়ের সময়েই অভিষেক হয়েছিল সৌরভ গাঙ্গুলির। অনিল কুম্বলের ১০ উইকেটও গায়কোয়াড়ের কোচিং জমানায়।
কিছুদিন আগেই অংশুমান গায়কোয়াড়ের চিকিৎসার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা দেওয়া হয়। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মহিন্দর অমরনাথ, সুনীল গাভাসকার, সন্দীপ পাটিল, দিলীপ বেঙ্গসরকার, মদন লাল, রবি শাস্ত্রী ও কীর্তি আজাদের মতো সতীর্থরা। কপিলদেব চিকিৎসার জন্য বোর্ড থেকে পাওয়া পেনশনের অর্থ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। সব চেষ্টা বৃথা হয়ে গেল।