এএফসি এশিয়ান কাপের কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ভারত ও বাংলাদেশের সমর্থকরা তাকিয়েছিলেন দুই দেশের দুই তারকা সুনীল ছেত্রী ও হামজা চৌধুরির দিকে। দুজনই সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। দুই দেশও আহামরি ফুটবল উপহার দিতে পারেনি। ফলস্বরূপ ম্যাচ গোলশূন্য ড্র। বাংলাদেশের কাছে আটকে গিয়ে বিপাকে পড়ল মানোলো মার্কুয়েজের দল। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে যাওয়া কিছুটা হলেও কঠিন করে ফেলল। বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ভারতের প্রাপ্তি ১ পয়েন্ট, সঙ্গে ঘরের মাঠে অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুন্ন।
ফিফা ক্রমতালিকায় বাংলাদেশের থেকে ৪৯ ধাপ এগিয়ে ভারত। অথচ শিলংয়ের মাঠে তার কোনও প্রভাব চোখে পড়ল না। বরং ভারতের তুলনায় বাংলাদেশই বেশি দাপট দেখিয়ে গেল। যদি বাংলাদেশের ফুটবলাররা সুযোগ কাজে লাগাতে পারতেন, ঘরের মাঠে অপরাজিত থাকার রেকর্ড এদিনই ভেঙে যেত ভারতের। অবসর ভেঙে ফেরা সুনীল ছেত্রীও এদিন দলকে ভরসা দিতে পারেননি। মালদ্বীপের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে সুনীল যে ফুটবল উপহার দিয়েছিলেন, এদিন তার ছিটেফোটা চোখে পড়েনি।
ম্যাচের শুরুতেই ভারতীয় গোলকিপার বিশাল কাইথের ভুলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। ম্যাচ সবে ১৫ সেকেন্ড গড়িয়েছে। একটা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুল করে বাংলাদেশের মিডফিল্ডার মজিবর রহমানের পায়ে জমা দেন বিশাল কাইথ। ফাঁকা গোল পেয়েও তাড়াহুড়ো করে বল মাইরে মারেন মজিবর রহমান। আবার সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। ডান প্রান্ত থেকে শেখ মোরছালিনের সেন্টারে হেড করেছিলেন শাহরিয়ার ইমন। তাঁর হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ভারতের পোস্টের পাশ ঘেঁষে চলে যায় বাইরে।
১২ মিনিটে ভারতের পরিত্রাতা হয়ে দাঁড়ান শুভাশিস বোস। জামালের কর্নার ধরে নেন বিশাল। বল ধরে লম্বা শট নিতে চেএছিলেন বিশাল। তাঁর শট গিয়ে লাগে বক্সের বাইরে দাঁড়ানো শাকিলের পিঠে। শাকিলের পিঠে লেগে বল চলে যায় হৃদয়ের কাছে। তাঁর শট গোল লাইন থেকে বাঁচান শুভাশিস বোস। প্রথম ১৫ মিনিট পর্যন্ত ভারতের গোল লক্ষ্য করে ৪টি শট নিয়েছিল বাংলাদেশ, ভারত একটাও নিতে পারেনি।
২২ মিনিটে তপু বর্মণ চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর খেলায় ফেরে ভারত। কারন, হামজা চৌধুরি রক্ষণে বাড়তি নজর দেওয়ায় মাঝমাঠ অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। সেই সুযোগটা কাজে লাগান ইদান্তা সিং, আপুইয়া, লিস্টন কোলাসোরা। ৩১ মিনিটে সুযোগ এসেছিল ভারতের সামনে। বাঁদিক থেকে উঠে এসে লিস্টন সেন্টার করেছিলেন। সেই বলে হেড করেছিলেন উদান্তা সিং। গোললাইন থেকে বাঁচান বাংলাদেশের গোলকিপার মিতুল মারমা। ফিরতি বলে শট নিয়েছেন ফারুখ চৌধুরি। এবার বল সরাসরি চলে যায় মিতুলের হাতে।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ভারতের আধিপত্য ছিল বেশি। বাংলাদেশের ডিফেন্সিভ থার্ডে পাসও খেলেছেন মহেশ সিং, আপুইয়া, লিস্টনরা। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। হামজা চৌধুরির দাপটে গোলের মুখ খুলতে পারেননি সুনীল, উদান্তা, ফারুখরা। তিন কাঠির নীচে বাংলাদেশ গোলকিপারও ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। ম্যাচের অন্তিম লগ্নে গোলের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে ভারতকে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করেন বিশাল কাইথ।