কলকাতা লিগের নাকি গুরুত্ব নেই মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস কর্তাদের কাছে। কর্তাদের না থাকতে পারে, সমর্থকদের আবেগ বলে তো একটা কথা আছে? লাখ লাখ সমর্থকদের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কোনও অধিকার নেই কর্তাদের। পাড়ায় পাড়ায় তো আর কর্তাদের টিটকিরি শুনতে হয় না। তাই লিগে দল হারল, কী ড্র করল, এই ব্যাপারে কোনও হেলদোল দেই। আর কর্তাদের সেই সেই মানসিকতার জন্য আবার মান গেল সমর্থকদের। পাড়ায় ঢুকলেই হয়তো ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাছে শুনতে হবে, ‘যে দলকে আমরা ৬ গোল দিয়েছিলাম, তাদের কাছেই আটকে যেতে হল!’
হ্যাঁ, এটাই ঘটনা। কলকাতা লিগে আবার ড্র করল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। এবার আটকে গেল ইস্টবেঙ্গলের কাছে ৬ গোল খাওয়া পুলিশ এসি–র কাছে। ম্যাচের ফল ১–১। প্রথমার্ধে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফেরায় পুলিশ এসি। সবথেকে বড় কথা, দু–দুটি পেনাল্টি নষ্ট করার খেসারত দিতে হল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসকে। দুটি পেনাল্টি নষ্ট করেন ফারদিন আলি মোল্লা ও অভিষেক রঘুবংশী। পুলিশের সঙ্গে ড্র করে সুপার সিক্সে ওঠার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে গেল মোহনবাগানের।
পুলিশ এসি–র বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ছন্নছাড়া মোহনবাগান। তিন বিভাগেই সমন্বয়ের অভাব। মাঝমাঠে খেলা তৈরি না হওয়ায় সুহেল ভাটরা গোলের জন্য সেভাবে বল পাচ্ছিলেন না। তার মাঝেই সুহেল ভাট একক প্রচেষ্টায় কয়েকবার পুলিশের গোলমুখে হানা দেন। কিন্তু সাফল্য আসছিল না। অবশেষে, তাঁর গোলেই এগিয়ে যায় মোহনবাগান। ম্যাচের ৪০ মিনিটে ফারদিন আলি মোল্লার কর্নার থেকে হেডে গোল করেন সুহেল ভাট। মিনিট চারেক পরই ব্যবধান বাড়াতে পারত মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। বক্সের মধ্যে সুহেল ভাটকে ফাউল করেন পুলিশ এসি–র রঞ্জিত সর্দার। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। ফারদিনের পেনাল্টি আটকে দেন পুলিশ গোলকিপার মইদুল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু দিকে আক্রমণ প্রতি আক্রমণে খেলা জমে ওঠে। টাইসন সিং মাঠে নামায় মোহনবাগানের আক্রমণে গতি বাড়ে। এই মধ্যে আবার পেনাল্টি পায় মোহনবাগান এবার অভিষেক রঘুবংশী বল বারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দেন। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে পুলিশে হয়ে সমতা ফেরান রবি দাস। মোহনবাগান ডি বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ডান পায়ের দুরন্ত শটে গোল করেন রবি। জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে মোহনবাগান। একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি। রেফারি ৯ মিনিট ইনজুরি সময় দিয়েও মোহনবাগানকে জেতাতে পারেননি। ম্যাচ ১–১ গোলে ড্র হয়। ৫ ম্যাচে ১টা জয়, ৩টি ড্র, ১টি হার মোহনবাগানের। ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে ৭ নম্বরে। দলের এই পারফরমেন্সে ক্ষিপ্ত মোহনবাগান সমর্থকরা। এদিন স্টেডিয়ামে তাঁরা বিক্ষোভো দেখান। তাতেও কি হুঁশ ফিরবে কর্তাদের? না দিনের পর দিল ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাছে টিটকিরি শুনতে হবে?