এক বনাম এগারো। এই তথ্যই বলে দেয় দুই দলের মধ্যে পার্থক্য কতটা। পয়েন্টের বিচারে তো বটেই, শক্তির বিচারেও। দেশের সেরা আক্রমণভাগ। রক্ষণও ততটাই শক্তিশালী। দলে গোল করার একাধিক ফুটবলার। সেই দলকেও কিনা জিততে হল রেফারির বদান্যতায়। আইএসএলের ফিরতি ডার্বিতেও জয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের। জেমি ম্যাকলারেনের গোলে কষ্টার্জিত জয় সবুজ–মেরুনের। দু–দুটি নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করে ইস্টবেঙ্গলকে হারের মুখে ঠেলে দিলেন রেফারি বেঙ্কটেশ।
গ্যালারির দর্শকরা তখনও ঠিকভাবে বসেননি। তার মধ্যেই গোল। ম্যাচের ২ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যায় মোহনবাগান। মাঝমাঠ থেকে লম্বা থ্রু বাড়িয়েছিলেন আশিস রাই। ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন হেক্টর ইউস্তে। গতিতে তাংকে পেছনে ফেলে ডানপায়ের শটে গোল করেন জেমি ম্যাকলারেন। ডার্বিতে এটাই দ্রুততম গোল। ৭ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ এসেছিল ক্লেইটন সিলভার সামনে। ৬ গজ বক্সে ডেভিডের সঙ্গে ওয়াল খেলে সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন। ক্লেইটন শট মারার আগেই কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান টম আলড্রেড।
২১ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল মোহনবাগানের সামনে। ইস্টবেঙ্গল বক্সের বাইরে থেকে জেসন কামিংস বল দিয়েছিলেন ম্যাকলারেনকে। ম্যাকলারেনের পাস ৬ গজ বক্সে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন মনবীর সিং। তাঁর শট ডানদিকে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে নিশ্চিত গোল বাঁচান ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখন সিং।
প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে ন্যায্য পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয় ইস্টবেঙ্গল। বক্সের মধ্যে বিষ্ণু পাস দিয়েছিলেন ডেভিডকে। ডেভিড গোলের দিকে বল পাঠানোর চেষ্টা করলে আপুইয়ার হাতে লাগে। নিশ্চিত পেনাল্টি। অথচ রেফারি বেঙ্কটেশ এড়িয়ে যান। শুধু এই ক্ষেত্রেই নয়, এদিন বেঙ্কটেশের বেশ কয়েকটা সিদ্ধান্ত ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে গেছে। যেমন ৩৯ মিনিটে অযৌক্তিকভাবে সৌভিক চক্রবর্তীকে হলুদ কার্ড দেখান বেঙ্কটেশ। ৫১ মিনিটে দিয়ামানতাকোসকে পরিস্কার ফাউল করেও বেঁচে যান আপুইয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে অনেকটাই বদলে যায় ইস্টবেঙ্গল। রক্ষণ জমাট রেখেও বারবার প্রতিআক্রমণে উঠে আসছিল। ৫৪ মিনিটে দারুণ একটা আক্রমণও গড়ে তুলেছিল। ডেভিডের কাছ থেকে বল পেয়ে ডানদিক দিয়ে উঠে গিয়ে ক্লেইটনের উদ্দেশ্যে আড়াআড়ি পাস বাড়িয়েছিলেন দিয়ামানতাকোস। ক্লেইটনের কাছে পৌঁছনোর আগেই ধরে নেন বাগান গোলকিপার বিশাল কাইথ।
৬৪ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের বড় ক্ষতি করে দেন রেফারি বেকটেশ। লিস্টন কোলাসো বল নিয়ে গতিতে ঢুকে যাচ্ছিলেন। ছুটে এসে স্লাইডিং ট্যাকেল করেন সৌভিক। লিস্টন ডাইভ দিয়ে পড়ে যান। রেফারি সৌভিককে হলুদ কার্ড দেখিয়ে ফ্রিকিকের নির্দেশ দেন। আগেই একটা হলুদ কার্ড দেখেছিলেন সৌভিক। দ্বিতীয়বার হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয় সৌভিককে। ১০ জনে হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ১০ জনের ইস্টবেঙ্গলকে পেয়েও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গলও সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ফলে আইএসএল ডার্বিতে জয় অধরাই থেকে গেল লাল–হলুদের কাছে।
আরও পড়ুনঃ কাশিমভের বিশ্বমানের গোলে বধ শক্তিশালী বেঙ্গালুরু, ১১ ম্যাচ পর জয়ের মুখ দেখল মহমেডান
আরও পড়ুনঃ প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে নজির স্মৃতি মান্ধানার, ভেঙে দিলেন মিতালি রাজের রেকর্ড