অস্কার ব্রুজো দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই যেন লালহলুদ ফুটবলারদের মনোবল ফিরে এসেছে। দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে কোয়ার্টার ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন, আইএসএলে অধিকাংশ সময় ৯ জনে খেলেও মহমেডানের সঙ্গে ড্র। সমর্থকরাও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। অবশেষে সেই অস্কার ব্রুজোর হাত ধরেই চলতি আইএসএলে প্রথম জয় তুলে নিল ইস্টবেঙ্গল। ঘরের মাঠে শক্তিশালী নর্থ–ইস্ট ইউনাইটেডকে হারাল ১–০ ব্যবধানে। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস।
নর্থ–ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ম্যাচটা সহজ ছিল না ইস্টবেঙ্গলের কাছে। ডুরান্ড কাপজয়ী নর্থ–ইস্ট আইএসএলের শুরু থেকেও দারুণ চমক দেখাচ্ছে। দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন মরক্কোর স্ট্রাইকার আলাদিন আজারাই। এদিন ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে জ্বলে উঠলেও তিনকাঠি খুঁজে পাননি। তাঁকে সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে দেননি লালহলুদ ডিফেন্ডাররা।
ঘরের মাঠে এদিন শুরু থেকেই নর্থ–ইস্টের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ৪৪ সেকেন্ডেই গোলের সুযোগ এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের সামনে। ডানদিক থেকে জিকসন সিংয়ের ভাসানো বলে ভলি করেছিলেন বিষ্ণু। কোনও রকমে চাপড় মেরে বাঁচান নর্থ–ইস্ট ইউনাইটেড গোলকিপার গুরমিত সিং। ৩ মিনিটে আবার ইস্টবেঙ্গলের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান নর্থ–ইস্টের গোলকিপার। মাদিহ তালালের দুরন্ত ফ্রিকিক বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে একহাতে কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান।
প্রথম ১০ মিনিট শুধুই ইস্টবেঙ্গলের ঝড়। এরপর ধীরে ধীরে খেলায় ফেরার চেষ্টা করে নর্থ–ইস্ট। ১২ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। কাজে লাগাতে পারেনি। ২ মিনিট পর আবার সুযোগ। পার্থিব গগৌইয়ের শট পোস্ট ঘেঁসে বেরিয়ে যায়। ১৬ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের সামনে আবার বাধা হয়ে দাঁড়ান গুরমিত। বিষ্ণুর পাস তালালের ছোট্ট ঠোকা। গোলে ঢোকার মুখে বাঁচান গুরমিত। তবে ২৩ মিনিটে আর দলের পতন রোধ করতে পারেননি। তালালের কর্নার নর্থ–ইস্ট রক্ষণে প্রতিহত হয়। এরপর কয়েকজনের পা ঘুরে আবার তালালের কাছে পৌঁছয়। তাঁর সেন্টার থেকে হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন দিয়ামানতাকোস। ৩৮ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ এসেছিল নর্থ–ইস্টের সামনে। ছাংতের সেন্টারে দুর্দান্ত হেড করেছিলেন আলাদিন। প্রভসুখন সিংকে পরাস্ত করে বল বারে লেগে ফিরে আসে।
দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া হয়ে ওঠে নর্থ–ইস্ট। কয়েকটা সুযোগও তৈরি করে। ৬১ মিনিটে আলাদিনের একটা দুরপাল্লার শট বারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৭১ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় নর্থ–ইস্ট। বিষ্ণুকে পেছন থেকে ধাক্কা মেরে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লাল কার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন বেমার। ১০ জন হয়ে যায় নর্থ–ইস্ট ইউনাইটেড। যদিও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি লালহলুদ ফুটবলাররা। ৮৭ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলও ১০ জন হয়ে যায়। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লাল কার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন লালচুংনুঙ্গা। যদিও আলাদিনরা ফায়দা তুলতে পারেননি। অবশেষে ৮ ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল। দলের মান বাঁচালেন দিয়ামানতাকোস।
আরও পড়ুনঃ ১৮৯ রান তুলেও বোলারদের ব্যর্থতায় হার, নাটকীয় শেষ ওভারে জিতে বাংলার বিজয়রথ থামাল মধ্যপ্রদেশ