ইনজুরি সময়ের খেলা ২ মিনিট গড়িয়েছে। লিজান্দ্রো মার্টিনেজের গোলে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। সেমিফাইনাল নিশ্চিত। হয়তো এরকমই ভেবেছিল আর্জেন্টিনা শিবির। ইকুয়েডর কিন্তু হাল ছাড়েনি। বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পেয়েছিল ইকুয়েডর। জন ইয়েবোয়ার ভাসানো বলে মাথা ছোঁয়ালেন কেভিন রডরিগেজ। এমিলিয়ানো মার্টিনেজ দাঁড়িয়ে দেখলেন দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়াচ্ছে। ম্যাচ টাইব্রেকারে। শেষ মুহূর্তে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েও অবশ্য শেষরক্ষা করতে পারল না ইকুয়েডের। টাইব্রেকারে ইকুয়েডরকে ৪–২ ব্যবধানে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শেষ চারে আর্জেন্টিনা।
ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে খলনায়ক হতে পারতেন লিওনেল মেসি। দলের অধিনায়ককে বাঁচিয়ে দিল সেই এমিলিয়ানো মার্টিনেজের বিশ্বস্ত হাত। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে যেমন দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন, আর্জেন্টিনার কোপার সেমিফাইনালে ওঠার পেছনেও সেই গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজের কৃতিত্ব। টাইব্রেকারের ইকুয়েডরের প্রথম দুটি শট বাঁচিয়ে দলকে শেষ চারে তোলেন মার্টিনেজ।
কোপার কোয়ার্টার ফাইনালে মেসি খেলতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় ছিল। দলের সেরা ফুটবলারকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রাখার সাহস দেখাননি আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি। শুরু থেকে মাঠে নামলেও একেবারেই নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন না মেসি। মেসি নিস্প্রভ থাকায় আর্জেন্টিনাও যেন ছন্দহীন। প্রথম ৩০ মিনিট বরং ইকুয়েডরের দাপট ছিল। ম্যাচের ২৭ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল ইকুয়েডরেরই সামনে। সুবিধাজনক জায়গা থেকে বল বাইরে মারেন কেনড্রি পায়েজ।
এরপরই খেলায় ফেরে আর্জিন্টিনা। ৩৫ মিনিটে মেসির কর্নার হেডে দ্বিতীয় পোস্টে পাঠান ম্যাক অ্যালিস্টার। ফাঁকায় দাঁড়ানো লিজান্দ্রো মার্টিনেজ হেডে গোল করে দলকে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। ৪১ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল আর্জেন্টিনার সামনে। রডরিগো ডি পলের পাস সুবিধাজনক জায়গায় পেয়েও বাইরে মারেন এনজো ফার্নান্ডেজ ।
দ্বিতীয়ার্ধেও আর্জেন্টিনাকে সেভাবে জ্বলে উঠতে দেয়নি ইকুয়েডর। বরং মাঝে মাঝে আর্জেন্টিনার রক্ষণে হানা দিচ্ছিলেন এনার ভ্যালেন্সিয়া, জর্ডি কাইসেদো, কেভিন রডরিগেজরা। ৬১ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগও পেয়েছিল। নিজেদের বক্সে হাতে বল লাগান আর্জেন্টিনার রডরিগো ডি পল। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। ইকুয়েডর অধিনায়ক ভ্যালেন্সিয়া বল পোস্টে মারেন। ফিরতি বলেও গোল করতে পারেননি পিয়েরো হিনকাপি। অবশেষে ম্যাচের ইনজুরি সময়ের ২ মিনিটে কেভিন রডরিগেজের সমতা ফেরানোর গোল। নির্ধারিত সময়েই স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যেত আর্জেন্টিনার। ইনজুরি সময়ের শেষ মুহূর্তে অরক্ষিত অবস্থায় বল জালে রাখতে পারেননি ইকুয়েডরের জর্ডি কাইসেদো।
অতিরিক্ত সময় না থাকায় ম্যাচ সরাসরি টাইব্রেকারে গনায়। টাইব্রেকারে প্রথম শটই মিস করেন লিওনেল মেসি। ক্রসবারে মারেন। ইকুয়েডরের অ্যাঞ্জেল মেনার প্রথম শট বাঁচিয়ে অধিনায়ককে স্বস্তি দেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। অ্যালান মিন্ডার দ্বিতীয় শটও আটকান মার্টিনেজ। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৪–২ ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা। মেসির ব্যর্থতার পর আর্জেন্টিনার হয়ে টাইব্রেকারে গোল করেন হুলিয়ান আলভারেজ, ম্যাক অ্যালিস্টার, গঞ্জালো মন্তিয়েল ও নিকোলাস ওটামেন্দি।