দীর্ঘদিন ধরেই ব্রাজিল ফুটবলে দৈন্যদশা চলছে। ২০০২ বিশ্বকাপের পর থেকে আর সাফল্য নেই। শেষবার কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ২০১৯ সালে। কনকাকাফ গোল্ড কাপ জিতেছে ২০১৩ সালে। জুনিয়র ফুটবলের অবস্থাও করুণ। ২০১১ সালে শেষবার অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন। দীর্ঘ ১২ বছরের খরা কাটিয়ে ২০২৩ সালে লাতিন আমেরিকা ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপে খেতাব জিতেছিল। এবছর খেতাব ধরে রাখা কিন্তু যথেষ্ট কঠিন ব্রাজিলের কাছে। শনিবার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আর্জেন্টিনার কাছে বিধ্বস্ত হল ৬–০ ব্যবধানে। ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসে আর্জেন্টিনার কাছে এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার।
২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭ গোল হজম করতে হয়েছিল ব্রাজিলকে। ভাগ্যিস এদিন অনূর্ধ্ব ২০ দলকে সেই লজ্জার মুখে পনতে হয়নি। ফিরে আসেনি ১১ বছর আগের সেই দুঃস্বপ্নের রান। তবে লাতিন আমেরিকার অনূর্ধ্ব ২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে আগে কখনও এত বড় ব্যবধানে হারেনি ব্রাজিল। প্রতিযোগিতার ৭১ বছরের ইতিহাসে আর্জেন্টিনার কাছে ৬ গোল হজম করার আগে ব্রাজিল কখন ৩ গোলের বেশি ব্যবধানে হারেনি। সবথেকে বড় ব্যবধানে জয় ছিল কলম্বিয়ার। ২০১৩ সালে বলিভিয়াকে হারিয়েছিল ৬–০ গোলে।
অনূর্ধ্ব ১৫ থেকে শুরু করে সিনিয়র ফুটবল, আগে কখনও আর্জেন্টিনার কোনও দল ৬ গোলের ব্যবধানে জয় পায়নি। এর আগে ১৯৪০ সালে রোকা কাপে ব্রাজিলকে ৬–১ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা জাতীয় দল। ৮৫ বছর পর নতুন ইতিহাস রচনা করলেন ক্লদিও এচেভেরিরা। স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় মিসায়েল দেলগাদো স্টেডিয়ামে লাতিন আমেরিকা অনূর্ধ্ব ২০ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। আর প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত আর্জেন্টিনার।
২০২৩ সালে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ খেলা দলটাকেই ধরে রেখেছেন আর্জেন্টিনার কোচ দিয়োগো প্লাসেন্তে। শুরু থেকে ঝড় তুলে ১১ মিনিটের মধ্যেই ৩ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ৬ মিনিটে প্রথম গোল করেন রিভার প্লেটের তারকা ইয়ার সুবিয়াব্রে। ৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন এচেভেরি। তিন মিনিট পর ব্রাজিলের ইগর সেরাতোর আত্মঘাতী গোলে ৩–০। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর কোনও গোল হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আবার দাপট শুরু আর্জেন্টিনার। ৫২ মিনিটে ৪–০ করেন অগাস্টিন রুবের্তো। ২ মিনিট পরেই নিজের দ্বিতীয় ও দলের হয়ে পঞ্চম গোলটি করেন এচেভেরি। ৭৮ মিনিটে আর্জেন্টিনার কফিনে শেষ পেরেক পোঁতেন সান্তিয়াগো হিদালগোর। এবছর সেপ্টেম্বরে চিলিতে অনুষ্ঠিত হবে অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ। লাতিন আমেরিকার এই চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে সেরা চারটি দল অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। মোট ১০ টি দল দুটি গ্রুপে প্রতিযোগিতায় খেলছে।
আরও পড়ুনঃ কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে আবার গোল দুরন্ত বিষ্ণুর, টানা ৩ ম্যাচ হারের পর জয়ে ফিরল ইস্টবেঙ্গল