২০২৩ সালে একদিনের বিশ্বকাপ ফাইনালে হারতে হয়েছিল ভারতকে। ৪৭০ দিন পর প্রতিশোধ। তবে এই প্রতিশোধকে মধুর বলা যাবে না। বিশ্বকাপের ফাইনাল ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের মধ্যে যে আকাশ–পাতাল তফাৎ। অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠল ভারত। বিরাট কোহলির ‘মাস্টারক্লাস’ ইনিংসই ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। এই নিয়ে পরপর ৩ বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত।
দুবাইয়ের বাইশ গজে পরের দিকে স্পিনারদের সামলানো কঠিন হবে। এই ভয়েই টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই সতর্ক ছিলেন দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও কুপার কনোলি। তৃতীয় ওভারে মহম্মদ সামি যখন কনোলিকে (৯ বলে ০) তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার রান ৪। কনোলি ফিরে যাওয়ার পর ঝন তোলেন হেড। ৩৩ বলে ৩৯ রান করে বরুণ চক্রবর্তীর বলে আউট হওয়ার আগে স্টিভ স্মিথের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়েন।
হেডাউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যান স্টিভ স্মিথ ও মার্নাস লাবুসেন (৩৬ বলে ২৯)। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে দুজনে তোলেন ৫৬। এরপর চতুর্থ উইকেটে জশ ইংলিসের (১২ বলে ১১) সঙ্গে ৩৪ ও পঞ্চম উইকেটে ক্যারির সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়েন স্মিথ। ৩৭ তম ওভারে সামির বলে বোল্ড হন স্মিথ। ৯৬ বলে তিনি করেন ৭৩। সেই সময় অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ৫ উইকেটে ১৯৯। অনেকেই আশা করেছিলেন হয়তো ৩০০ রান পার করে ফেলবে অস্ট্রেলিয়া।
কিন্তু পরের ওভারেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (৫ বলে ৭) বোল্ড করে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন অক্ষর প্যাটেল। এরপর লড়াই শুরু করেন অ্যালেক্স ক্যারি। ৪৭.১ ওভারে শ্রেয়স আয়ারের দুরন্ত থ্রো–তে রান আউট হন ক্যারি (৫৭ বলে ৬১)। শেষ পর্যন্ত ৪৯.৩ ওভারে ২৬৪ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৪৮ রানে ৩ উইকেট নেন মহম্মদ সামি। ২টি করে উইকেট নেন বরুণ চক্রবর্তী ও রবীন্দ্র জাদেজা।
অস্ট্রেলিয়ার ২৬৪ রান তাড়া করতে নেমে ভারতও শুরুতে বিপদে পড়েছিল। ৭.৫ ওভারে ৪৩ রানের মধ্যে ফিরে যান দুই ওপেনার শুভমান গিল (১১ বলে ৮) ও রোহিত শর্মা (২৯ বলে ২৮)। এরপর কোহলির ‘মাস্টারক্লাস’ ব্যাটিং। শ্রেয়স আয়ারের সঙ্গে জুটি বেংধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে শ্রেয়স আয়ারের সঙ্গে তোলেন ৯১। ১৩৪ রানের মাথায় শ্রেয়সকে (৬২ বলে ৪৫) তুলে নিয়ে জুটি ভাঙেন অ্যাডাম জাম্পা। এরপর চতুর্থ উইকেটে অক্ষর প্যাটেলের (৩০ বলে ২৭) সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি গড়েন কোহলি।
অক্ষর প্যাটেল ফিরে যাওয়ার পর কোহলিকে সঙ্গ দেন লোকেশ রাহুল। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে ওঠে ৪৭ রান। এই জুটিই ভারতের জয়ের পথ পরিস্কার করে। ভারতের জয়ের জন্য যখন ৪৫ বলে ৪০ রান দরকার, তখন হাল ছেড়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সেই সময়ই আঘাত অ্যাডাম জাম্পার। তাঁর গুগলি বুঝতে না পেরে ওড়াতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন কোহলি। ৯৮ বলে তিনি করেন ৮৪। হার্দিক পান্ডিয়া (২৮) এসে রাহুলের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়ে আউট হন। এরপর রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে ভারতকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন লোকেশ রাহুল (৩৪ বলে অপরাজিত ৪২)। ১১ বল বাকি থাকতে ২৬৭/৬ তুলে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।