ইংল্যান্ড সফরের আগে দেশের দুই সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা অবসর নেওয়ার পর অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। ভারতের তরুণ ব্রিগেড পারবে তো ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়াই করতে? কোহলির শূন্যস্থানই বা কে পূরণ করবেন। ভারতীয় ব্যাটিংকে দিশা দেখাচ্ছেন শুভমান গিল। প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় টেস্টেও সেঞ্চুরি। স্পর্শ করলেন বিজয় হাজারে ও মহম্মদ আজহারউদ্দিনের কৃতিত্ব। শুভমানের সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে বড় রানের পথে ভারত। প্রথম দিনের শেষে ভারতের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১০। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করলেন যশস্বী জয়সওয়াল।
ভারতের শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি। প্রথম টেস্টের মতো এজবাস্টনেও টস ভাগ্য কাজ করেনি শুভমান গিলের। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায়। সতর্কভাবে শুরু করেও শেষরক্ষা হয়নি লোকেশ রাহুলের (২৬ বলে ২)। নবম ওভারে ক্রিস ওকসের বলে তিনি বোল্ড হন। এরপর যশস্বী জয়সওয়াল ও করুণ নায়ার ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যান। ৯৫ রানের মাথায় জুটি ভাঙেন ব্রাইডন কার্স। তুলে নেন করুণ নায়ারকে (৫০ বলে ৩১)।
এরপর যশস্বীকে সঙ্গে নিয়ে ৬৬ রানের জুটি গড়ে তোলেন শুভমান গিল। শুরুতে সতর্ক থাকলেও পরের দিকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন যশস্বী। করুণ নায়ার ফিরে যাওয়ার পরেও ইতিবাচক ব্যাটিং চালিয়ে যান। অবশেষে ৪৬তম ওভারে ছন্দপতন। বেন স্টোকসের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে চালাতে গিয়ে উইকেটের পেছনে জেমি স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। ১০৭ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন যশস্বী। গত বছর থেকেই দারুণ ছন্দে রয়েছেন যশস্বী জয়সওয়াল। চলতি মরশুমের শুরুতেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় টেস্টে ফিরলেন সেঞ্চুরির মুখ থেকে। মাত্র ১৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া। তবে এজবাস্টনে ভারতের বড় রানের ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন ভারতের এই তরুণ ওপেনার।
যশস্বী ফিরে যাওয়ার পর ঋষভ পন্থ খুব বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হননি। ২৫ রান করে শোয়েব বশিরের বলে আউট হন। শার্দূল ঠাকুরকে বসিয়ে এই টেস্টে নীতীশ কুমার রেড্ডিকে সুযোগ দিয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না এই অলরাউন্ডার। মাত্র ১ রান করে ক্রিস ওকসের বলে আউট হয়ে ফিরে যান। নীতীশ ফিরে যাওয়ার পর রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে দিনের তৃতীয় সেশনটা নিরাপদেই কাটিয়ে দেন শুভমান গিল। আবার সেঞ্চুরি করে নজির গড়লেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক। দিনের শেষে শুভমান ১১৪ ও জাদেজা ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অধিনায়ক হিসেবে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করে শুভমান গিল স্পর্শ করলেন বিজয় হাজারে ও মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে। ১৯৫১–৫২ মরশুমে দিল্লি ও ব্রাবোর্ন টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছিলেন বিজয় হাজারে। মহম্মদ আজহারউদ্দিন ১৯৯০ সালে লর্ডস ও ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইংল্যআন্ডের বিরুদ্ধে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন।
এদিকে, কদিন ধরেই জল্পনা চলছিল, দ্বিতীয় টেস্টে যশপ্রীত বুমরাকে খেলানো হবে কিনা, তা নিয়ে। পুরো ফিট থাকলেও ওয়ার্কলোড কমানোর জন্য তাঁকে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। বুমরার পরিবর্তে প্রথম একাদশে আকাশ দীপ। প্রথম একাদশে আরও দুটি পরিবর্তম করে এজবাস্টনে মাঠে নামে ভারত। শার্দূল ঠাকুরের জায়গায় নীতীশ কুমার রেড্ডি ও সাই সুদর্শনের জায়গায় ওয়াশিংটন সুন্দর। কুলদীপ যাদবের প্রথম একাদশে জায়গা হয়নি।