জয়ের জন্য ৩৪৪ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের রান তখন ৩ উইকেটে ২৪৯। জয়ের জন্য ৬৯ বলে ৯৬ রান দরকার। হাতে ৭ উইকেট। ক্রিজে তখন দুর্দান্ত ব্যাটিং করা বাবর আজম। সঙ্গে সলমান আগা। জুটি ভাঙতেই ধস। বাকি ৭ উইকেটে উঠল মাত্র ২২। তার মধ্যে শেষ ৬ ব্যাটার মিলে তুললেন মাত্র ৩ রান। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের খেসারত জিতে হল পাকিস্তানকে। টি২০ সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডের কাছে একদিনের সিরিজেও হার দিয়ে শুরু। প্রথম একদিনের ম্যাচে ৭৩ রানে জিতে সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে যেন কিউয়িরা। নিজের জন্মভূমির বিরুদ্ধেই একদিনের অভিষেকে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড নিউজিল্যান্ডের মুহাম্মদ আব্বাস।
নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে সিরিজের প্রথম একদিনের ম্যাচে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠায় পাকিস্তান। এক সময় ৫০ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন উইল ইয়ং (১), নিক কেলি (১৫) ও হেনরি নিকোলস (১১। মনে হচ্ছিল বোধহয় বড় রানে পৌঁছতে পারবে না নিউজিল্যান্ড। সেখান থেকে দুর্দান্ত জুটি গড়ে তোলেন মার্ক চ্যাপম্যান ও ড্যারিল মিচেল। দুজনের জুটিতে ওঠে ১৯৯ রান। ৮৪ বলে ৭৬ রান করে আউট হন মিচেল। এরপর ক্রিজে নেমে ঝড় তোলেন মুহাম্মদ আব্বাস।
মুহাম্মদ আব্বাসের বাড়ি পাকিস্তানে। জন্ম লাহোরে। তাঁর বাবা আজহার আব্বাস পাকিস্তানে প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট খেলেছেন। দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু সম্ভব হয়নি। ক্রিকেটের টানেই নিউজিল্যান্ডে পাড়ি দেন আজহার আব্বাস। ওয়েলিংটন ও অকল্যান্ডের হয়েও প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে খেলেছেন। বর্তমানে ওয়েলিংটনে সহকারী কোচের দায়িত্বে রয়েছেন। ৩ বছর বয়স থেকে অকল্যান্ডেই বেড়ে উঠেছেন মুহাম্মদ আব্বাস। নিজের দেশের বিরুদ্ধে অভিষেক ম্যাচেই রেকর্ড গড়লেন পাকিস্তানজাত এই ক্রিকেটার।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে এদিন মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন মুহাম্মদ আব্বাস। একদিনের অভিষেক ম্যাচে এটা দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড। আব্বাসের আগে অভিষেকে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল ভারতের ক্রুনাল পান্ডিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যালিক অ্যাথানেজের। দুজনেই ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ২৬ বলে ৫২ রান করে আউট হন আব্বাস। নিউজিল্যান্ড ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে তোলে ৩৪৪।
রান তাড়া করতে নেমে ভাল শুরু করেছিল পাকিস্তান। ৩৩ বলে ৩৯ রান করে উসমান খান যখন আউট হন, পাকিস্তানের রান তখন ১২.৪ ওভারে ৮৩। স্কোরবোর্ডে আর ৫ রান যোগ করে ফেরেন আরেক ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক (৩৬)। এরপর অধিনায়ক মহম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম ৭৬ রানের জুটি গড়েন। রিজওয়ান ৩০ রান করেআউট হন। সলমান আগাকে নিয়ে বাবর গড়েন ৫৯ বলে ৮৫ রানের জুটি। এই জুটিই পাকিস্তানকে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। বাবরের (৮৩ বলে ৭৮) আউটের পর একে একে ফিরে যান তায়ব তাহির (১), ইরফান খান (০), নাসিম শাহ (০), হ্যারিস রউফ (১), আকিফ জাভেদ (১)। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে সলমান আউট হন ৫৮ রান করে। ৪৪.১ ওভারে ২৭১ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।