এবারের সিরিজের আগে এজবাস্টনে ৮টি টেস্ট খেলেছিল ভারত। ৭টি হার, ১টি ড্র। খুবই খারাপ পরিসংখ্যান। শুভমান গিলরা কি পারবেন এজবাস্টনের পরিসংখ্যান বদলে দিতে। এই প্রশ্নটাই টেস্টের প্রথম দিন থেকে ঘুরে ফিরে আসছিল। তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে বদলে গেল এজবাস্টনে ভারতের ইতিহাস। শুভমান গিলের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের এই মাঠে প্রথম জয় পেল ভারত। জয় এল ৩৩৬ রানের বিশাল ব্যবধানে। যা বিদেশের মাটিতে রেকর্ড ব্যবধানে জয়। বিধ্বংসী বোলিং করে ভারতকে জয় এনে দিলেন আকাশদীপ।
প্রথম ইনিংসে ভারতের ৫৮৭ রানের জবাবে ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় ৪০৭ রানে। ১৮০ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ৪২৭ রান তুলে ইনিংস সমাপ্তি ঘোষণা করে ভারত। প্রথম ইনিংসে দ্বিশতরান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক শুভমান গিল। ১৬১ রান করে তিনি আউট হন। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬০৮। অর্থাৎ ইংল্যান্ডকে জিততে গেলে বিশ্বরেকর্ড করতে হত।
জয়ের জন্য বিশাল রানের লক্ষ্য দেখে চাপে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। ম্যাচ বাঁচানোর আশঙ্কা তাড়া করতে থাকে। আর তাতেই চতুর্থ দিনের শেষে ৭২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে। আউট হন জ্যাক ক্রলি (০), বেন ডাকেট (২৫) ও জো রুট (৬)। চতুর্থ দিনের শেষেই পরাজয়ের আশঙ্কা নেমে এসেছিল ইংল্যান্ডের ঘাড়ে। শুধু একটাই দেখার ছিল, শেষদিন কতক্ষণ লড়তে পারে ইংল্যান্ড।
পঞ্চম দিন সকালে বৃষ্টিতে আশার আলো দেখেছিল ইংল্যান্ড। কারণ একমাত্র বৃষ্টিই তাদের পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। যখন খেলা শুরু হয়, দেড় ঘন্টারও বেশি সময় নষ্ট। তবে জেতার ব্যাপারে এতটাই মরিয়া ছিল ভারত, ম্যাচ শুরু হতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে। আকাশদীপের জোড়া ধাক্কায় বেসামাল হয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। প্রথমে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিচে ওলি পোপকে (৫০ বলে ২৪) বোল্ড করেন। পরে ইনসুইঙ্গারে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেললেন হ্যারি ব্রুককে (৩১ বলে ২৩)। ইংল্যান্ড তখন ২১.৩ ওভারে ৮৩/৫।
এরপর কিছুটা লড়াই করেন অধিনায়ক বেন স্টোকস আর জেমি স্মিথ। দুজনের জুটিতে ওঠে ৭০ রান। মধ্যাহ্নভোজের আগে আবার ধাক্কা। ওয়াশিংটন সুন্দরের বল পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়েছিলেন বেন স্টোকস। বল প্যাডে লাগে। আম্পায়ার আউট দেন। ডিআরএস নিয়েও লাভ হয়নি। স্টোকসের আউটের পরই ম্যাচের ভবিষ্যত ঠিক হয়ে যায়। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর ক্রিস ওকসকে (৭) তুলে নেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। এরপর আকাশদীপ ফেরান স্মিথকে (৯৯ বলে ৮৮)। জশ টাং (২) রবীন্দ্র জাদেজার শিকার। ব্রাইডন কার্সকে (৪৮ বলে ৩৮) তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে ২৭১ রানে গুটিয়ে দেন আকাশদীপ। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৯ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। ম্যাচে ১৮৭ রানে ১০ উইকেট। যা ইংল্যান্ডের মাটিতে কোনও ভারতীয় বোলারের সেরা বোলিং। ভেঙে দিলেন ১৯৮৬ সালে চেতন শর্মার নেওয়া ১৮৮ রানে ১০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড।