অলিম্পিকের পদক জয়ের হ্যাটট্রিক করতে গেলে স্মার্ট হওয়া জরুরী! হ্যাঁ, এমনই উপলব্ধি ভারতীয় মহিলা ব্যাডমিন্টন তারকা পিভি সিন্ধুর। তবে কোর্টের বাইরে নয়, কোর্টের ভেতরে। প্যারিস অলিম্পিকের আগে আরও স্মার্ট হতে জার্মানির ছোট্ট শহর সারব্রুকেনের উপকন্ঠে অস্থায়ী শিবির গড়ে তুলছেন সিন্ধু। দু’বারের অলিম্পিক পদকজয়ী তথা প্রাক্তন এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্যক্তিগত কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফদের নিয়ে হারম্যান–নিউবার্গার স্পোর্টস স্কুলে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
অলিম্পিকের প্রস্তুতির জন্য কেন হারম্যান–নিউবার্গার স্পোর্টস স্কুলকে বেছে নিয়েছেন সিন্ধু? আসলে জার্মানির সারব্রুকেনের উপকন্ঠে অবস্থিত এই স্পোর্টস স্কুল শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে। তাছাড়া প্যারিসের খুবই কাছে। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ছাড়াও যেখানে নিঃশব্দে প্রস্তুতি নিতে পারবেন। একমাসেরও বেশি সময় ধরে এখানে নিভৃতে প্রস্তুতি চলবে সিন্ধুর। মনোযোগ দেবেন টানা তৃতীয় অলিম্পিক পদকের।
জার্মানির এই ছোট শহরকে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে সিন্ধু বলেন, ‘আমি মেন্টর প্রকাশ পাডুকোন স্যারের সাথে আলোচনা করেছি। ভেবেছিলাম এটা ভাল জায়গা হবে। এটা প্যারিসের কাছাকাছি। কোথাও কোনও কোলাহল নেই। খুবই শান্তিপূর্ণ। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারব এবং অলিম্পিকের আগে প্রস্তুতিতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারব।’
২০১৬ রিও অলিম্পিকে রুপো জিতেছিলেন পিভি সিন্ধু, ২০২১ টোকিওতে ব্রোঞ্জ। কিন্তু প্যারিস অলিম্পিকের আগে সেরা ছন্দে নেই এই ভারতীয় শাটলার। অথচ অতীতে যে কোনও বড় প্রতিযোগিতার আগে নিজের সেরা ছন্দে থেকেছেন। শুধু এবারই ব্যতিক্রম। বিশ্বের ১২ নম্বর তারকা চলতি বছরে ২৪ ম্যাচের মধ্যে ১৫টিতে জিতেছেন, হেরেছেন ৯টি ম্যাচে। আটটি টুর্নামেন্টের মধ্যে পাঁচটিই প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছেন। জেতার মতো পরিস্থিতি থেকে বেশ কয়েকবার ফিরে আসতে হয়েছে।
তবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ পদকজয়ী সিন্ধুর দাবি, তিনি ভাল জায়গায় রয়েছেন। তবে প্যারিসে কোর্টে আরও স্মার্ট হতে হবে। সিনি বলেছেন, ‘শারীরিক এবং মানসিকভাবে আমি খুব ভাল জায়গায় আছি। তবে কোর্টে আমাকে আরও স্মার্ট হতে হবে। আমার কোচ আগুস ডি স্যান্টোসে এই ব্যাপারটা দেখছেন। আমার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে, শুধু মাথা খাটিয়ে খেলতে হবে। আশা করছি দেশের জন্য আর একটা পদক নিয়ে আসতে পারব।’
নিজের খেলার কৌশলের ব্যাপারে সিন্ধু বলেন, ‘শুধুমাত্র একটি স্ট্রোক বা কৌশলের উপর ফোকাস করছি না। রক্ষণ, আক্রমণ বা নেট প্লে, সব ধরণের স্ট্রোক নিয়ে কাজ করছি। কারণ কেউ জানে না, কী অপেক্ষা করে থাকবে। এমন কিছু খেলোয়াড় আছে, যারা দ্রুত খেলার পরিবর্তন করতে এবং প্ল্যান ‘বি’–তে যেতে যথেষ্ট স্মার্ট। তাই এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সবকিছু নিখুঁত করতে অনুশীলনে বাড়তি মনোযোগ দিচ্ছি।’
মালয়েশিয়া মাস্টার্স ফাইনালে চীনের ওয়াং ঝি ইয়ের কাছে পরাজিত হন সিন্ধু। সিঙ্গাপুর ওপেনের ফাইনালে ক্যারোলিনা মারিনের বিরুদ্ধে জেতার পরিস্থিতিতে থেকেও ম্যাচ হারেন। তা সত্ত্বেও প্যারিসে পদক জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী সিন্ধু। তিনি বলেন, ‘ফাইনালে আসা সহজ নয়। আর ম্যাচ শেষ করা বা না করা, এটা নির্ভর করে কীভাবে খেলব তার ওপর। কখনও কখনও কোনও পরিকল্পনা কাজে লাগে না। সম্প্রতি নিজের খেলায় অনেক উন্নতি করেছি। তবে পরিশ্রম করতে হবে। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আশা করছি অলিম্পিকে ভাল কিছু করব।’