২০০৮ থেকে প্রতিটা অলিম্পিকেই দেশকে পদক দিয়েছেন কুস্তিগীররা। প্যারিসে পদক জিতেও হাতছাড়া ভিনেশ ফোগাটের। তাহলে কি প্যারিস অলিম্পিক থেকে কুস্তিতে খালি হাতে ফিরতে ভারতকে? মান বাঁচালেন আমন শেহরাওয়াত। পুরুরুষদের ফ্রিস্টাইলে ৫৭ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতলেন ভারতের এই কুস্তিগীর। ভারতীয়দের মধ্যে সবথেকে কম বয়সে পদক জিতে ভেঙে দিলেন পিভি সিন্ধুর রেকর্ড। অভিষেক অলিম্পিকেই বাজিমাত আমনের।
ব্রোঞ্জ জয়ের লড়াইয়ে আমনের প্রতিপক্ষ ছিলেন পুয়ের্তো রিকোর তোই ডারিয়ান ক্রুজ। শুরু থেকেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রথমে ক্রুজ এগিয়ে যান। পরে আক্রমণাত্মক কৌশল নিয়ে এগিয়ে যান আমন। প্রথম পিরিয়ডে আমন ৬–৩ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। দ্বিতীয় পিরিয়ডে ক্রুজ ২ পয়েন্ট তুলে নেন। পরে আবার কাউন্টার অ্যাটাকে গিয়ে আমন এগিয়ে যান ৮–৫ ব্যবধানে। ১৩–৫ পয়েন্টে ক্রুজকে পেছনে ফেলে ব্রোঞ্জ জিতে নেন আমন। প্যারিস অলিম্পিকে দেশকে অস্টম পদক উপহার দিলেন এই কুস্তিগীর।
ব্রোঞ্জ জেতার পথে আমন ভেঙে দেন পিভি সিন্ধুর সবচেয়ে কম বয়সে অলিম্পিক পদক জয়ের রেকর্ড। ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকে রুপো জিতেছিলেন সিন্ধু। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল ২১ বছর ১ মাস ১৪ দিনের মাথায়। আর আমন প্যারিসে পদক জিতলেন ২১ বছর ২৪ দিন বয়সে। জীবনের প্রথম অলিম্পিকে মাত্র ২১ বছর বয়সে পদক জিতে আপ্লুত আমন। প্যারিস থেকেই ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে সোনা জয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাত্র ১১ বছর বয়সে বাবা–মা’কে হারানো এই ভারতীয় কুস্তিগীর। তিনি বলেন, ‘সোনা জেতার লক্ষ্য নিয়ে প্যারিসে এসেছিলাম। কিন্তু ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হল। ২০২৮ অলিম্পিকে সোনা জিতেই ফিরব।’
ব্রোঞ্জের লড়াইয়ের ম্যাচের আগে আমনকেও ভিনেশ ফোগাটের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল। সেমিফাইনাল ম্যাচের পর তাঁর ওজন ৪.৬ কেজি বেড়ে গিয়েছিল। ওজন কমিয়ে ব্রোঞ্জের ম্যাচে নামার জন্য আমনের হাতে সময় ছিল ১০ ঘন্টা। এই সময়ের মধ্যে কঠিন পরিশ্রম করে ৪.৬ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেন ভারতীয় এই কুস্তিগীর। ভিনেশ ফোগাটের কথা মাথায় রেখে সেমিফাইনাল ম্যাচ শেষেই সময় নষ্ট না করে ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় নেমে পড়েন আমন। শেষ পর্যন্ত ৪.৬ ওজন কমিয়ে ফেলে ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে নামেন।
১৯৫২ হেলসিঙ্কি অলিম্পিকে কেডি যাদবের হাত ধরে কুস্তিতে প্রথম অলিম্পিক এসেছিল ভারতের ঘরে। পুরুষদের ফ্রিস্টাইলে ৫৭ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। অলিম্পিকে স্বাধীন ভারতের সেটাই প্রথম পদক। এরপর শুধুই খরা। ৫৬ বছর পর ২০০৮ সালে বেজিংয়ে ৬৬ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জেতেন সুশীল কুমার। তারপর থেকে প্রতিটা অলিম্পিকেই পদক। ২০১২ সালে লন্ডনে রুপো জেতেন সুশীল। ৬০ কেজি বিভাগে লন্ডনে ব্রোঞ্জ জেতেন যোগেশ্বর দত্ত। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে মহিলাদের ৫৮ কেজি ফ্রিস্টাইলে ব্রোঞ্জ জেতেন সাক্ষী মালিক। টোকিওতে পুরুষদের ৫৭ কেজি ফ্রিস্টাইলে রুপো জেতেন রবি কুমার দাহিয়া, ৬৫ কেজিতে ব্রোঞ্জ বজরং পুনিয়ার। এবারও দুটি পদক জয়ের সম্ভাবনা ছিল। ভিনেশ ফোগাটকে বেশি ওজনের জন্য বাতিল করায় আমন শেহরাওয়াতের ব্রোঞ্জেই সন্তুষ্ট থাকতে হল ভারতকে।
আরও পড়ুনঃ ১০ মাস পর মাঠে ফিরছেন সামি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশ সিরিজেই
আরও পড়ুনঃ টানা ৩ ম্যাচে জয়, ইস্টার্ন রেলকে হারিয়ে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল