লাতিন আমেরিকার দুই শক্তিধর দেশ। একদলের ভান্ডারে যুগ্মভাবে রেকর্ড সংখ্যক ১৫টি কোপা আমেরিকা। অন্যদল চ্যাম্পিয়ন ৯ বার। ব্রাজিলের স্বপ্ন ছিল সংখ্যাটা ১০–এ নিয়ে যাওয়ার। অন্যদিকে, উরুগুয়ের স্বপ্ন এককভাবে সর্বাধিক কোপা জয়ের রেকর্ড গড়া। স্বপ্নের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল উরুগুয়ে। ব্রাজিলকে টাইব্রেকারে ৪–২ ব্যবধানে হারিয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উরুগুয়ে। সামনে এবার কলম্বিয়া। অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়া ৫–০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে পানামাকে।
শেষ ৮ ম্যাচে ৩টি–তে জয় পেয়েছে ব্রাজিল। ২০২৬ বিশ্বকাপ যোগ্যতাঅর্জন পর্বেও ছন্ছে ছিল না। বিশ্বকাপে আদৌও যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। চলতি কোপাতেও সাম্বা ঝড় তুলতে পারেনি জুনিয়র দরিভালের দল। উরুগুয়ের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালের আগেও ধাক্কা। গ্রুপ লিগে দুটি হলুদ কার্ড দেখায় এদিন খেলতে পারেননি ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তাঁর না থাকাটা পার্থক্য গড়ে দিয়ে গেল।
ম্যাচের শুরু থেকে ব্রাজিলের বলের দখল বেশি থাকলেও গোলমুখে কার্যকরী হতে পারছিলেন না রাফিনহা, পাকুয়েতা, এনড্রিকরা। সাম্বা ঝড় আটকাতে গা–জোয়ারি ফুটবলের আশ্রয় নিয়েছিলেন ভালভার্দে, আরাউহোরা। উরুগুয়ের গা–জোয়ারি ফুটবলের সঙ্গে যোগ হয়েছিল ব্রাজিলের উদ্দেশ্যহীন ফুটবল। তার মধ্যেই ১৩ মিনিটে দারুণ জায়গায় ফ্রিকিক পেয়েছিল ব্রাজিল। আগের ম্যাচে এই জায়গা থেকেই দুর্দান্ত গোল করেছিলেন রাফিনহা। এদিন তিনি দেওয়ালে মারেন। মিনিট তিনেক পরেই এনড্রিককে বক্সের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন ভালভার্দে। পেনাল্টি পেতে পারত ব্রাজিল। রেফারি এড়িয়ে যান।
২৮ মিনিটে ব্রাজিলের সামনে গোলের সুযোগ এসেছিল। এনড্রিক কাজে লাগাতে পারেননি। ৩৫ মিনিটে দারুণ সুযোগ এসেছিল উরুগুয়ের সামনে। সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়েও বল জালে রাখতে পারেননি নুনেজ। তাঁর হেড অল্পের জন্য তিনকাঠির বাইরে যায়। ফিরতি আক্রমণে উরুগুয়ে গোলকিপার রচেটকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন রাফিনিয়া। প্রথমার্ধে কোনও দলই আর গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধেও ব্রাজিলের বল দখল বেশি ছিল। কিন্তু গোলের মতো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। ৫৭ মিনিটে প্রতি আক্রমণে উঠে এসে সুযোগ তৈরি করেছিল উরুগুয়ে। ম্যাক্সিমিলিয়ানো আরাউজু বল বারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দেন। ৭৪ মিনিটে বড় ক্ষতি হয়ে যায় উরুগুয়ের। রাফিনিয়াকে ফাইল করে লালকার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান উরুগুয়ের নান্ডেজ। রেফারি প্রথমে হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন। ‘ভার’–এর সাহায্য নিয়ে তিনি লাল কার্ড দেখান। ১০ জন হয় যেতেই রক্ষণের ঝাঁপ বন্ধ করে দেন উরুগুয়ে কোচ মার্সেলো বিয়েলসা। বিপক্ষের এক ফুটবলার কমে গেলেও সুযোগটা নিতে পারেনি ব্রাজিল।
নির্ধারিত সময় গোলশূন্য থাকায় ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে। উরুগুয়ের হয়ের প্রথম শটে গোল করেন ভালভার্দে। ব্রাজিলের মিলিতটোর প্রথম শট আটকে দেন রোসেট। উরুগুয়ের বেন্টাঙ্কুর গোল করে ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। ব্রাজিলের হয়ে দ্বিতীয় শটে গোল করেন পেরেইরা। উরুগুয়ের তৃতীয় শটে গোল করেন আরাসকায়েতা। ব্রাজিলের ডগলাস লুইজ পোস্টে মারেন। উরুগুয়ের গিমেনেজের শট বাঁচিয়ে ব্রাজিলকে লড়াইয়ে রাখেন অ্যালিসন। ব্রাজিলের হয়ে চতুর্থ শটে গোল করেন মার্টিনেলি। পঞ্চম শটে করে উরুগুয়েকে সেমিফাইনালে তোলেন ম্যানুয়েল উগার্তে।
অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়া ৫–০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে পানামাকে। কলম্বিয়ার হয়ে গোলগুলি করেন জন কর্ডোবা, জেমস রডরিগেজ (পেনাল্টি), লুইজ দিয়াজ, মিগুয়েল বোরহা (পেনাল্টি)।