ফ্রান্সের বক্সের কিছুটা বাইরে বল পেয়েছিলেন। কোমরের দোলায় দুলিয়ে দিয়েছিলেন আন্দ্রিয় রাবিয়োঁকে। তারপরই বাঁপায়ের জাদু। ২৫ গজ দুর থেকে বাঁক খাওয়ানো শটে অবিশ্বাস্য গোল। সামনে থাকা ফ্রান্সের চার ডিফেন্ডার হতভম্ব হয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। এই গোলেই ইতিহাস তৈরি করলেন স্পেনের লামিনে ইয়ামাল। ভেঙে দিলেন কিংবদন্তি পেলের রেকর্ড। ইয়ামালের গোলেই সমতা ফেরায় পিছিয়ে পড়া স্পেন। শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সকে ২–১ ব্যবধানে হারিয়ে ইউরোর ফাইনালে।
ইউরো কাপ ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে সবথেকে কম বয়সে গোল করার রেকর্ড এখন ইয়ামালের দখলে। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে ১৭ বছর ২৩৯ দিন বয়সে গোল করেছিলেন পেলে। আর ইউরো কাপে ইয়ামাল গোল করলেন ১৬ বছের ৩৬২ দিন বয়সে। ইয়ামালের এই অবিশ্বাস্য গোল শুধু সমতাই ফেরায়নি, ছন্দ এনে দিয়েছিল স্পেনকে। তারপর একের পর আক্রমণ তুলে নিয়ে এসে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছিল ফ্রান্স রক্ষণকে। যার ফলশ্রুতি ২৫ মিনিটে দানি ওলমার গোল।
ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই প্রেসিং ফুটবলের ওপর জোর দিয়েছিল স্পেন। ৫ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত। লামিনে ইয়ামালের দুর্দান্ত সেন্টারে ফাবিয়ান রুইজের হেড তিনকাঠিতে থাকেনি। অথচ ওই একই জায়গা থেকে বাজিমাত করে যান ফ্রান্সের কোলো মুয়ানি। স্পেনের প্রাথমিক ঝড় সামলে পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছিল ফ্রান্স। ম্যাচের ৯ মিনিটে উসমান ডেম্বেলের কাছ থেকে বল পেয়ে নাভাসের মার্কিংয়ের ফাঁদ এড়িয়ে দ্বিতীয় পোস্টে অসাধারণ সেন্টার রেখেছিলেন কিলিয়ান এমবাপে। নিঁখুত হেডে বল জালে পাঠান কোলো মুয়ানি। মিশেল প্লাতিনি ও জিনেদিন জিদানের পর ফ্রান্সের তৃতীয় ফুটবলার বিশ্বকাপ ও ইউরো কাপের সেমিফাইনালে গোল করার নজির গড়েন মুয়ানি।
পিছিয়ে পড়ে মরিয়া হয়ে ওঠে ফ্রান্স। একের পর এক আক্রমণ তুলে নিয়ে আসে। অবশেষে ২১ মিনিটে ইয়ামালের অবিশ্বাস্য গোল। সমতা ফেরানোর পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতেই রাখে স্পেন। ২৫ মিনিটে সমতাও ফেরায়। নাবাসের শট ফ্রান্স গোলকিপার প্রতিহত করলে বল পান দানি ওলমো। বক্সের মধ্যে থেকে গোলার মতো শট নিয়েছিলেন। বল জুলস কুন্দের পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণাত্মক ফুটবল থেকে সরে আসেনি স্পেন। ফ্রান্স কিন্তু সমানতালে পাল্লা দেয়। দ্রুত আক্রমণে উঠে এসে স্পেন রক্ষণকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছিল। ৬০ মিনিটে ডেম্বেলের শট কোনও রকমে বাঁচান স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমন। ৭৫ মিনিটে আরও একটা সুযোগ হাতছাড়া করে ফ্রান্স। ৮১ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল স্পেনের সামনে। ইয়ামালের শট বার ঘেঁসে বাবেরিয়ে যায়। ৮৬ মিনিটে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে। কিন্তু বারের ওপর দিয়ে বল উড়িয়ে স্পেনের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে দেন।
আরও পড়ুনঃ পুজা, রাধার হাত ধরে মান বাঁচাল ভারত, প্রোটিয়াদের সঙ্গে টি২০ সিরিজ ড্র