নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়েও ম্যাচ গোলশূন্য। যথারীতি টাইব্রেকার। পর্তুগাল সমর্থকরা আশায় বুক বাঁধছিলেন। অন্যদিকে, আশঙ্কায় দুলছিলেন ফ্রান্স সমর্থকরা। কারণ, টাইব্রেকারে জেতার ব্যাপারে খুব একটা সুনাম নেই কিলিয়ান এমবাপেদের। আশঙ্কার আরও কারণ ছিল, পর্তুগীজ গোলকিপার দিয়োগো কোস্তা। প্রি–কোয়ার্টার ফাইনালে স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে তিন–তিনটি শট বাঁচিয়ে দলকে শেষ আটে তুলেছিলেন। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে কোস্তার হাত অবশ্য ‘বিশ্বস্ত’ হয়ে উঠতে পারল না। টাইব্রেকারে পুর্তুগালকে ৫–৩ ব্যবধানে হারিয়ে ইউরো কাপের শেষ চারে ফ্রান্স। সেমিফাইনালে সামনে স্পেন। ইউরোয় শেষ হল ‘সি আর সেভেন’ অধ্যায়।
প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ঘোষণা করেছিলেন, এটাই তাঁর শেষ ইউরো কাপ। চেয়েছিলেন জীবনের শেষ ইউরো কাপে ছাপ রেখে যাওয়ার। কিন্তু হল না। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে এদিন নিস্প্রভ ছিলেন রোনাল্ডো। প্রথমার্ধে পর্তুগীজদের বলের দখল বেশি থাকলেও গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেননি। রোনাল্ডো, ব্রুনো ফার্নান্ডেজ, বার্নার্দো সিলভারা। কিলিয়ান এমবাপে, কোলো মুয়ানি, আঁতোয়ান গ্রিজমানরাও পর্তুগাল গোলকিপার দিয়োগো কোস্তাকে পরীক্ষার মধ্যে ফেলতে পারেননি। রোনাল্ডোর মতো এমবাপেও ছিলেন নিস্প্রভ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও কোনও দলের কাছে ভাল ছিল না। ৬০ মিনিটের পর ধীরে ধীরে আক্রমণে চাপ বাড়ায় পর্তুগাল। পরপর দুটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে। ৬২ মিনিটে জোয়াও কানসেলোর পাস থেকে গোল লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন ব্রুনো ফার্নান্ডেজ। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণভাবে বাংচান ফ্রান্স গোলকিপার মেইগনান। মিনিট দুয়েক পর ভিতিনিয়ার শট আংশিকভাবে প্রতিহত করেন। ফিরতি বলে শট নিয়েছিলেন রোনাল্ডো। আবার প্রতিহত করেন মেইগনান।
ফ্রান্সও পিছিয়ে ছিল না। তারাও আক্রমণ তুলে নিয়ে আসে। আক্রমণ প্রতি আক্রমণে খেলা জমে ওঠে। ৬৬ মিনিটে কোলো মুয়ানি পর্তুগাল গোলকিপার কোস্তাকে একা পেয়েও বাইরে মারেন। ৫ মিনিট পর এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গার সামনেও বাধা হয়ে দাঁড়ান কোস্তা। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের শেষদিকে অবশ্য কোনও দলই ঝুঁকি নিতে চায়নি। অতিরিক্ত সময়ের ৩ মিনিটে রোনাল্ডোর সামনে সুযোগ এসেছিল। কাজে লাগাতে পারেননি। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারে পর্তুগালের বড় ভরসা ছিলেন গোলকিপার দিয়েগো কোস্তা। এদিন তিনি একটা শটও বাঁচাতে পারেননি। ফ্রান্সের গোলকিপার মাইক মেইগনানও একটা শট বাঁচাতে পারেননি। ফ্রান্সের হয়ে পাঁচটি শটেই গোল করেন ডেম্বেলে, ফোফানা, কৌউন্ডে, বার্কোলা, হার্নান্ডেজ। পর্তুগালের হয়ে গোল করেন রোনাল্ডো, বার্নার্দো সিলভা, নুনো মেন্ডেজ। জোয়াও ফেলিক্সের চতুর্থ শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। পঞ্চম শট নেওয়ার দরকার হয়নি।