চলতি ইউরো কাপে দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল তুরস্ক। চমক দেখিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে এসেছিল হাকান সুকুরের দেশ। কোয়ার্টার ফাইনালে শেষরক্ষা হল না। দুরন্ত ফুটবল উপহার দিয়েও শেষ আটের লড়াইয়ে হারতে হল হল্যান্ডের কাছে। ২–১ ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালে ডাচরা। ডাচদের সামনে এবার ইংল্যান্ড। অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ডকে টাইব্রেকারে ৫–৩ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে হ্যারি কেনরা। দলকে সমতায় ফিরিয়ে ও টাইব্রেকারে গোল করে আগের ইউরো কাপের ফাইনালে ব্যর্থতার শাপমোচন করলেন বুকায়ো সাকা।
তখন ৮০ মিনিট খেলা গড়িয়েছে। ১–০ ব্যবধানে পিছিয়ে ইংল্যান্ড। সুইজারল্যান্ডের মাঝমাঠে বল ধরে ডানদিকে সাকাকে বাড়িয়েছিলেন রাইস। একটু এগিয়ে বক্সের বাইরে থেকে ডানপায়ের কোনাকুনি শটে দলকে সমতায় ফেরান সাকা। ওই সময় দলকে সমতায় না ফেরালে এবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হত ইংল্যান্ডকে। কারণ সমতা ফেরার পরও দুরন্ত ফুটবল খেলছিল সুইজারল্যান্ড।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট ছিল সুইসদের। ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই বেশ কয়েকবার বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। ইংল্যান্ডের সামনে প্রথম গোলের সুযোগ আসে ১৪ মিনিটে। ২০ গজ দুর থেকে নেওয়া রাইসের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপরও বেশ কয়েকবার গোলের পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন রাইস, হ্যারি কেনরা। কিন্তু সুইস রক্ষণ সতর্ক থাকায় গোল পায়নি ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে সাউথগেটের দল কিছুটা যেন রক্ষণাত্মক হয়ে পড়েছিল। সেই সুযোগে ইংল্যান্ডের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সুইজারল্যান্ড। ৭৫ মিনিটে গোলও তুলে নেয়। এনডয়ের নীচু সেন্টার থেকে দলকে এগিয়ে ডেন ব্রিল এমবোলো। মিনিট পাঁচেক পরই সমতা ফেরান বুকায়ো সাকা। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কোনও দলি ঝুঁকি নিতে চায়নি। তার মাঝেই ৯৫ মিনিটে রাইসের দুরন্ত শট গোলে ঢোকার মুখে উড়ে গিয়ে বাঁচান সুইস গোলকিপার। ১১৭ মিনিটের মাথায় সুইজারল্যান্ডের জারদান শাকিরির কর্নার পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডে হয়ে গোল করেন পালমার, বেলিংহাম, সাকা, টোনি, আলেকজান্ডার–আর্নল্ড। সুইজারল্যান্ডের হয়ে গোল করেন ফ্যাবিয়ান শার, শাকিরি, জেকি আমদৌনি। ম্যানুয়েল আকাঞ্জির শট আটকান ইংল্যান্ড গোলকিপার পিকফোর্ড।
অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে, হলান্ডের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও শেষরক্ষা করতে পারেনি তুরস্ক। পর্তুগালের বিরুদ্ধে গ্রুপ লিগের ম্যাচে আত্মঘাতী গোল করেছিলেন তুরস্কের ডিফেন্ডার সামিত আকায়দিন। এদিন ভুলের প্রায়শ্চিত্য করে ৩৫ মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন। প্রথমার্ধে আর কোনও গোল হয়নি। ৭০ থেকে ৭৬, ৬ মিনিটের কমলা ঝড়ে উয়ে যায় তুরস্ক। ৭০ মিনিটে মেম্ফিস ডিপাই সেন্টার থেকে হেডে গোল করে সমতা ফেরান স্তেফান দে ফ্রাই। ৭৬ মিনিটে ডেনজেল ডামফ্রিসে ডান প্রান্ত থেকে করা সেন্টার তুরস্ক রাইটব্যাক মের্ত মুলডুর ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল পাঠান। এই আত্মঘাতী গোলেই ২০ বছর পর ইউরোর সেমিফাইনালে হল্যান্ড।