প্রথম পর্বের ম্যাচে মহেশ সিং ও নন্দকুমার সেকারের জোড়া লালকার্ড। তবুও দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়ে মহমেডানের বিরুদ্ধে ১ পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে অবশ্য কার্ড সমস্যায় পড়তে হয়নি। ভাঙা দল নিয়েও দুরন্ত ফুটবল উপহার দিয়ে ৩ পয়েন্ট তুলে নিল লাল–হলুদ ব্রিগেড। জয় এল ৩–১ ব্যবধানে। গোল করে প্রথম পর্বের ম্যাচে লালকার্ড দেখার প্রায়শ্চিত্য করলেন মহেশ সিং। দুরন্ত ফুটবল খেলে ম্যাচের সেরাও তিনি। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে বাকি দুটি গোল করেন সল ক্রেসপো ও ডেভিড। মহমেডানের একমাত্র গোলটি অ্যালেক্সিজ গোমেজের।
বেশ কয়েকজন ফুটবলার চোটের কবলে। ক্লেইটন সিলভা, লালচুংনুঙ্গা চোটের জন্য ছিলেন না। প্রথম একাদশে ফেরেন সৌভিক চক্রবর্তী ও আনোয়ার আলি। ভাঙা দল নিয়েও ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয় মিনিটেই সুযোগ এসে গিয়েছিল লাল–হলুদের সামনে। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল সুবিধাজনক জায়গা থেকেও গোলে রাখতে পারেননি আনোয়ার আলি। ৯ মিনিটে প্রতি–আক্রমণে মহমেডানের সামনেও গোলের সুযোগ এসেছিল। ডানদিক থেকে নীচু সেন্টার করেছিলেন ফ্রাঙ্কা। ৬ গজ বক্সে সামনে শুধু ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখন গিলকে পেয়েও বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি মনবীর সিং। ১৬ মিনিটে নিশু কুমারের কর্নার বারে লেগে ফিরে আসে।
আক্রমণে চাপ বজায় রেখে ১৮ মিনিটে আবার গোলের সুযোগ তৈরি করে ইস্টবেঙ্গল। মেসি বাউলির পাস দিয়ামানতাকোস সুবিধাজনক জায়গায় পেয়েও বাইরে মারেন। অবশেষে ২৭ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন মহেশ সিং। পিভি বিষ্ণুর কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে শট নেন। বল প্রথম পোস্ট দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়। অথচ, প্রথম পোস্টেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মহমেডান গোলকিপার পদম ছেত্রি। অবাক করার ব্যাপার, তিনি ডানদিকে ঝাঁপান। ৩১ মিনিটে দিনের সহজতম সুযোগ নষ্ট করেন মহমেডানের নতু বিদেশি মার্ক। ৬ গজ বক্সে মনবীরের পাস ধরে সামনে শুধু প্রভসুখনকে একা পেয়েও তাঁর গায়ে মারেন। প্রথমার্ধে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল।
দ্বিতীয়ার্ধেও ইস্টবেঙ্গলের দাপট অব্যাহত ছিল। ৬৪ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল মহেশ সিংয়ের সামনে। তাঁর দুর্দান্ত সাইড ভলি কোনও রকমে ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান মহমেডান গোলকিপার পদম ছেত্রি। তবে দ্বিতীয় গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ইস্টবেঙ্গলকে। পরের মিনিটেই ২–০। মহমেডানের রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে যান পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা সল ক্রেসপো। তিনি বল বাড়ান মেসি বাউলিকে। মেসি বাউলি আবার বল বাড়ান ক্রেসপোকে। আগুয়ান মহমেডান গোলকিপার পদম ছেত্রির মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান সল ক্রেসপো।
এই সময় আক্রমণ প্রতি–আক্রমণে খেলা দারুণ জমে ওঠে। ৬৮ মিনিটে প্রতি–আক্রমণ থেকে ব্যবধান কমায় মহমেডান। মাঝমাঠ থেকে বাঁদিকে দুর্দান্ত থ্রু পাস বাড়ান পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা রবি হাঁসদা। সেই বল ধরে কোনাকুনি শটে ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখনকে হার মানান ফ্রাঙ্কা। ৭০ মিনিটে আবার ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল ইস্টেবঙ্গলের সামনে। হেক্টর ইউস্তের হেড ক্রশবারে লেগে ফিরে আসে।
৭৬ মিনিটে নাটক দারুণ জমে ওঠে। মহমেডানের সমতা ফেরানোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রশবার ও আনোয়ার আসি। অ্যালেক্সিজ গোমেজের শট ফিস্ট করে বাঁচান প্রভসুখন গিল। ফিরতি বলে শট নিয়েছিলেন রবি হাঁসদা। বল ক্রশবারে লেগে গোললাইনে পড়ে ফিরে এসে রেমসাঙ্গার কাছে যায়। তাঁর ব্যাকভলি গোললাইন থেকে বাঁচান আনোয়ার আলি। ৮৯ মিনিটে মহমেডানের কফিনে শেষ পেরেক পোঁতেন মহমেডানেরই প্রাক্তনী ডেভিড। ডানদিক থেকে দিয়ামানতাকোস সেন্টার। প্রভাত লাকড়া বুক দিয়ে নামিয়ে দেন। বাঁপায়ের দুরন্ত সাইড ভলিতে গোল করেন ডেভিড।