মহমেডানের বিরুদ্ধে জিতলেই কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দোড়গোড়ায় পৌঁছে যেত ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলকে আটকে দিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই আরও জমিয়ে দিল মহমেডান। দুরন্ত ফুটবল উপহার দিয়ে দু–দুবার এগিয়ে গিয়েও জয় এল না সাদাকালো ব্রিগেডের। ম্যাচের ফল ২–২। ইস্টবেঙ্গলকে আটকে লিগ জমিয়ে দিল মহমেডান। ইস্টবেঙ্গল–মহমেডান ম্যাচ ড্র হওয়ায় চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে দারুণভাবে থাকল ডাময়ন্ডহারবার এফসি।
ম্যাচের ২ মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল মহমেডানের সামনে। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল দীনেশের কাঁধে লেগে গোলে ঢুকছিল। ডানদিকে উড়ে গিয়ে দুরন্ত সেভ করেন ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার আদিত্য পাত্র। শুধু এই ক্ষেত্রেই নয়, বেশ কয়েকবার দক্ষতার শীর্ষে উঠতে হয়েছিল লালহলুদ গোলকিপারকে। না হলে এদিন মরশুমের প্রথম হারের মুখ দেখতে হত ইস্টবেঙ্গলকে।
আক্রমণ প্রতিআক্রমণে ম্যাচের শুরু থেকেই দারুণ জমে উঠেছিল কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গল–মহমেডানের এই ডার্বি। পেন্ডুলামের মতোই দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। কখনও এ প্রান্তে বল, তো কখনও অন্যপ্রান্তে। এইরকম সংঘবদ্ধ ফুটবল লিগের শুরু থেকে খেলতে পারলে নিশ্চিতভাবেই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে থাকত। খেলার গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ২১ মিনিটে এগিয়ে এগিয়ে যায় মহমেডান। মাঠমাঠ থেকে লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন সুজিত। ইস্টবেঙ্গল বক্সে সেই বল ধরে যোশেফ দুরন্ত পাস বাড়ান পেছন থেকে উঠে আসা বামিয়া সামাদের উদ্দেশ্যে। ফাঁকা গোলে বল পাঠান সামাদ। ৪০ মিনিটে সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল। পরিত্রাতা সেই জেসিন টিকে। মহমেডান বাইলাইন থেকে উঁচু মাইনাস করেছিলেন পিভি বিষ্ণু। শ্যামল বেসরার শট জেসিন টিকে–র পায়ে লেগে বল জালে জড়িয়ে যায়। প্রথমার্ধে খেলার ফল ছিল ১–১।
দ্বিতীয়ার্ধেও দুই দলই আক্রমণের গতি বজায় রাখে। ৫১ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় মহমেডান। সুজিতের ভাসানো সেন্টার ইস্টবেঙ্গল বক্সে পেয়ে যান লালথানকিমা। বল ধরতে গিয়ে পড়ে যান। সেই বল ছিটকে আসে রবিনসন সিংয়ের কাছে। ডানপায়ের গড়ানো শটে গোল করে মহমেডানকে এগিয়ে গেন রবিনসন। জোশেফ জাস্টিন দু–দুবার গোলমুখী শট ব্লক না করলে ব্যবধান আরও বাড়ত মহমেডানের। ৬৯ মিনিটে জেসিন টিকে–র জোরালো শট পাঞ্চ করে বার করে দেন মহমেডান গোলকিপার শুভদীপ পণ্ডিত। সারা ম্যাচে এই একবারই কঠিন বল বাঁচান সাদাকালো গোলকিপার।
৭১ মিনিটে তৃতীয় গোল পেয়ে যেতে পারত মহমেডান। মাঝমাঠ থেকে ডিফেন্স চেরা থ্রু প্রায় পেয়ে গিয়েছিলেন সাকা। কিন্তু আদিত্য পাত্র বেরিয়ে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। অবশেষে ৭৬ মিনিটে ম্যাচে ফেরে ইস্টবেঙ্গল। দলের মান বাঁচান সেই জেসিন টিকে। মাঝমাঠ থেকে বাঁদিকে বল বাড়ান আমন সিকে। বল ধরে এগিয়ে গিয়ে বাঁপায়ের প্লেসিংয়ে গোল করে সমতা ফেরান জেসিন। নিঃসন্দেহে মরশুমের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ গোল। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে জয়ের সুযোগ এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের সামনে হীরা মণ্ডলের শট গোললাইন সেভ করেন মিতাই।
মহমেডানের সঙ্গে ড্র করলেও খেতাব জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল। ১৫ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪১। ডায়মন্ডহারবারের ১৪ ম্যাচে পয়েন্ট ৩৬।
আরও পড়ুনঃ আনোয়ারকে ইস্টবেঙ্গলে খেলার অনুমতি ফেডারেশনের, কেরালার বিরুদ্ধে লালহলুদ জার্সি গায়ে অভিষেক?