২৮ মিনিটেই লালকার্ড দেখে দু–দুজন ফুটবলার মাঠের বাইরে। বিপক্ষকে বাকি সময় ৯ জনে পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারল না মহমেডান! দলের ফুটবলারদের এই ব্যর্থতায় গোটা মরশুম আক্ষেপ করতে হবে মহমেডান কোচ আন্দ্রে চেরনিশভকে। ৯ জনের ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে ব্যর্থ সাদাকালো ব্রিগেড। টানা হারের পর অবশেষে চলতি আইএসএলে প্রথম পয়েন্টের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল। মহেডানের সঙ্গে খেলা গোলশূন্য। শেষ পর্যন্ত পুরো দল মাঠে থাকলে অস্কার ব্রুজোর দলের জয় পাওয়াটা অসম্ভব হত না।
ম্যাচের শুরুতে মহমেডানের আক্রমণের ঝাঁঝ বেশি ছিল। ফ্রাঙ্কা, অ্যালেক্সিজ, বিকাশ সিংরা বারবার ইস্টবেঙ্গল বক্সে হানা দিচ্ছিলেন। হিজাজি মাহেরকে যথেষ্ট নড়বড়ে লাগছিল। তাঁর ভুলেই ১৫ মিনিটে গোল খাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। মাঝমাঠ থেকে লম্বা পাস তাড়া করছিলেন ফ্রাঙ্কা। বল ধরার জন্য গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন প্রভসুখন গিল। হিজাজির কাঁধে লেগে বল বেরিয়ে গোলের দিকে যাচ্ছিল। ছুটে গিয়ে হেডে কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান হিজাজি নিজেই। ১৮ মিনিটে আনোয়ারের ভুলে আবার গোলের সুযোগ এসেছিল ফ্রাঙ্কার সামনে। হিজাজি সময় মতো ব্লক করায় ঠিকভাবে শট নিতে পারেননি ফ্রাঙ্কা।
ইস্টবেঙ্গলের সামনে প্রথম সুযোগ আসে ম্যাচের ২১ মিনিটে। বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রিকিক পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তালালের ফ্রিকিক উড়ে গিয়ে বাঁচান প্রথম খেলতে নামা মহমেডান গোলকিপার ভাস্কর রায়। এর কিছুক্ষণ পরই চূড়ান্ত নাটক। ইস্টবেঙ্গলের নন্দকুমারের জার্সি ধরে টানেন মহমেডানের অমরজিৎ সিং কিয়াম। নন্দকুমার পাল্টা হাত চালান। সরাসরি অমরজিতের মুখে লাগে। সামনেই ছিলেন রেফারি হরিশ কুণ্ডু। নন্দকুমারকে লাল কার্ড দেখান। রেফারির সিদ্ধান মেনে নিতে না পেরে মহেশ সিং জলের বোতলে লাথি মারেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বার করে দেন রেফারি। ৯ জন হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। তাই আর আক্রমণের রাস্তায় হাঁটেনি।
দ্বিতীয়ার্ধেও সেই ম্যাচ বাঁচানোর স্ট্র্যাটেজি ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না ইস্টবেঙ্গলের সামনে। মোটামুটি ইস্টবেঙ্গল অর্ধেই খেলা হয়। একাধিক সুযোগও তৈরি হয়। কিন্তু মহমেডান ফুটবলাররা তিনকাঠি ভেদ করতে পারেননি।
৫১ মিনিটে গোল করার সুযোগ এসেছিল মহমেডানের সামনে। সহজ সুযোগ নষ্ট করেন বিকাশ সিং। শুধু বিকাশই নয়, ফ্রাঙ্কা, রেমসাঙ্গা, পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা মানজোকিরা যে সুযোগ নষ্ট করলেন, চোখে দেখা যায় না। ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখন গিলও বেশ কয়েকটা দারুণ সেভ করে। ৯ জনে খেলে নৈতিক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল।