এবছর কলকাতা লিগ কি শেষ পর্যন্ত লালহলুদ তাঁবুতেই ঢুকবে? বিনো জর্জের দল যেভাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে, খেতাব জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সুপার সিক্সে সুরুচি সংঘকে উড়িয়ে দিল ৫–০ ব্যবধানে। জোড়া গোল আমন সিকে–র। বাকি তিনটি গোল করেন বিষ্ণু, জেসিন ও রোশল। অর্থাৎ, লালহলুদের পাঁচটি গোলই এসেছে কেরলিয়ান ফুটবলারদের পা থেকে।
ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে ৯ মিনিটেই এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। জেসিন টিকে–র কাছ থেকে বল পেয়ে সুরুচি সংঘের আগুয়ান গোলকিপার লাল্টু মণ্ডলের পাশ দিয়ে বাঁ পায়ের প্লেসিংয়ে বল জালে পাঠান আমন সিকে। ২ মিমিট পরেই পিভি বিষ্ণুর সামনে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল। তিনজন ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে নেওয়া তাঁর শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বিষ্ণুকে। ১৭ মিনিটে বাঁদিক দিকে উঠে বক্সের মধ্যে পাস বাড়ান জেসিন দিকে। সেই বল ধরে বাঁপায়ের শটে ২–০ করেন বিষ্ণু।
২৬ মিনিটের মধ্যেই ৩–০। গোল খরা কাটান আগের দুটি ম্যাচে তিনকাঠি খুঁজে না পাওয়া জেসিন টিকে। মাঝমাঠ থেকে বিষ্ণু বল দেন বাঁদিক থেকে উঠে আসা সায়ন ব্যানার্জিকে। সায়ন নিজেই গোলে শট নিতে পারতেন। তা না করে ৬ গজ বক্সের মাথয়া পাস দেন জেসিনকে। পড়ে যেতে যেতে বল জালে পাঠান জেসিন। আগের দুটি ম্যাচে গোল না পাওয়া জেসিনের লিগে এটা ১১ নম্বর গোল। ৪১ মিনিটে ব্যবধান কমানোর সুযোগ এসেছিল সুরুচি সংঘের কাছে। দেবজিতের শট দারুণ দক্ষতার সঙ্গে বাঁচান ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার আদিত্য পাত্র।
বিরতির আগেই ৪–০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। এই গোলের কারিগরও জেসিন টিকে। মাঝমাঠ থেকে বল বাড়ান বাঁদিকে সায়ন ব্যানার্জিকে। বক্সের বাঁদিক থেকে ডানদিকে পাস বাড়ান সায়ন। ডানপায়ের শটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন আমন। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের দাপটের সামনে মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুযোগ পায়নি সুরুচি সংঘ।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ছবিটা কিছু বদলায়। ৪ গোলে এগিয়ে থাকায় ইস্টবেঙ্গলের খেলায় অনেকটাই শিথিলতা আসে। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে বেশ কয়েকবার আক্রমণে উঠে আসে সুরুচি সংঘ। তিনকাঠির নীচে আদিত্য পাত্র বেশ কয়েকটা নিশ্চিত গোল বাঁচান। তার মাঝেই ৭৩ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে পঞ্চম গোলটি করেন রোশল। সুরুচি গোলকিপার লাল্টু মণ্ডল বল নিয়ে বক্স ছেড়ে অনেকটাই বেরিয়ে এসেছিলেন। বল কেড়ে নিয়ে রোশল ৩৫ গজ দুর থেকে লম্বা উঁচু শটে গোল করেন। ৭৪ মিনিটে সত্যেন্দ্র মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে মাটি ঘেঁষা শট নিয়েছিলেন। দুর্দান্ত সেভ করেন ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার আদিত্য পাত্র। ৮৬ মিনিটে মহম্মদ মুশারফের শট পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা সুরুচি গোলকিপার ঋত্বিক হাঁসদা উড়ে গিয়ে না বাঁচালে ৬ নম্বর গোলটি পেয়ে যেত ইস্টবেঙ্গল। শেষ পর্যন্ত ৫–০ ব্যবধানে জিতে খেতাবের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল।
আরও পড়ুনঃ যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, পুরুষ ও মহিলা ক্রিকেটে পুরস্কারমূল্যে বৈষম্য ঘুচিয়ে দিল আইসিসি