ইস্টবেঙ্গল তাহলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভাল খেলে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ ২–তে এই ধারণাই জোরালো হয়ে দাঁড়াল। ডুরান্ড কাপ ও আইএসএল মিলিয়ে টানা ৮ ম্যাচ হেরে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ ২–এর গ্রুপ লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। গ্রুপ লিগের প্রথম ম্যাচে পারো এফসি–র সঙ্গে ড্র। পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসকে ৪ গোল। গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচ ছিল সবথেকে শক্তিশালী দল লেবাননের নেজমে এসসি–র বিরুদ্ধে। নেজমেকে ৩–২ ব্যবধানে হারিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ ২–র কোয়ার্টার ফাইনালে গেল ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ২টি গোল করেন দিয়ামানতাকোস, একটি গোল আত্মঘাতী।
প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী ‘এ’ থেকে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে। আর এই তিন গ্রুপের সেরা রানার্স দল শেষ আটে যাবে। অন্যদিকে, পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দুটি গ্রুপ ‘ডি’ ও ‘ই’ থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স দল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে। ‘এ’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ আটে গেল লালহলুদ ব্রিগেড। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত একটা দলের কাছে এটা বিশাল প্রাপ্তি।
কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে গেলে নেজমে এসসি–র বিরুদ্ধে জেতা ছাড়া রাস্তা ছিল না ইস্টবেঙ্গলের সামনে। মরণবাঁচন ম্যাচে দারুণভাবে জ্বলে উঠল ইস্টবেঙ্গল। আগের ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে যেভাবে শুরু করেছিল, লেবাননের নেজমে এসসি–র বিরুদ্ধেও সেই একই গতিতে শুরু করেছিল লালহলুদ ব্রিগেড। ম্যাচের ৮ মিনিটেই এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। মাদিহ তালালের কর্নার নেজমের এক ডিফেন্ডার বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল ঢুকিয়ে দেন। ১৫ মিনিটেই ২–০। তবে এই গোলটা নেজমের উপহার দেওয়া নয়। মাঝমাঠ থেকে মাদিহ তালাল ডানদিকে বল বাড়িয়েছিলেন মহেশ সিংকে। সেই বল ধরে ৬ গজ বক্সে রাখেন মহেশ। নেজমে ডিফেন্ডাররা অফসাইড ভেবে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে অরক্ষিত দিয়ামানতাকোস বিনা বাধায় বল জালে পাঠান।
২ গোলে পিছিয়ে পড়ে সম্বিত ফেরে নেজমে ফুটবলারদের। ব্যবধান কমানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। ১৮ মিনিটেই সমতা ফেরায়। মাঝমাঝ থেকে ভেসে আসা লম্বা বল ধরে নেজমের তাহা গতিতে ইউস্তেকে পরাস্ত করে এগিয়ে আসা প্রভসুখন গিলের বাঁদিক দিয়ে বল জালে পাঠান আতায়া। ২৬ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন দিয়ামানতাকোস ও মাদিহ তালাল। দুজনও ৬ গজ বক্সের সামনে থেকে তিনকাঠিতে বল রাখতে পারেননি। তবে তালাল যেভাবে বল বারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দেন, এককথায় অবিশ্বাস্য। ৪৩ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে দুরন্ত গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান হোসেন মুনজার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মরিয়া ছিল নেজমে। ৪৭ মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। সহজ সুযোগ নষ্ট করেন কুরানি। না হলে তখনই ৩–২ ব্যবধানে এগিয়ে যেত নেজমে। এরপর ইস্টবেঙ্গলের সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। ৪৯ মিনিটে নন্দকুমার অবিশ্বাস্য সুযোগ নষ্ট করেন। প্রথমার্ধে তালাল যে সুযোগ নষ্ট করেছিলেন, তার থেকেও সহজ ছিল নন্দকুমারের গোল করা। অবশেষে ম্যাচের ৭৭ মিনিটে জয়ের সেই কাঙ্খিত গোল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। মাদিহ তালালকে বক্সের মধ্যে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে জয় এনে দেন দিয়ামানতাকোস। বাকি সময়ে চাপ বজায় রাখলেও সমতা ফেরাতে পারেনি নেজমে।
আরও পড়ুনঃ অবিচারের জবাব দিয়ে তুলে নিলেন ৬ উইকেট, মুকেশের হাত ধরে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ভারতীয় ‘এ’ দলের